ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ দেখা না দেওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করতেন। এতে ফলন কম হতো। উৎপাদনে সময় বেশি লাগত। বর্তমানে কৃষকেরা উচ্চফলনশীল সরিষা আবাদ করে থাকেন। এবার উপজেলায় উচ্চফলনশীল বারি-১৭, বারি-১৪, বারি-১৮ ও স্থানীয় টরি-৭ জাতের সরিষার চাষাবাদ হয়েছে।
বর্তমানে প্রতি মণ কাঁচা সরিষা আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুকনো সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে।
উপজেলার বাঁশগাড়া গ্রামের কৃষক অতুল চন্দ্র রায় এক বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন। এতে তাঁর খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। সরিষা পেয়েছেন আট মণ।
চন্দরিয়া গ্রামের মুক্তারুল আলম বলেন, ‘আমন ও বোরো চাষের মাঝে অনায়াসে সরিষা চাষাবাদ করা যাচ্ছে। বীজ বোনার ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে সরিষার ফসল ঘরে তোলা যায়। অন্য আবাদের সমস্যা হয় না। এতে দুই ফসলি জমিগুলো তিন ফসলি জমি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এতে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। সরিষা চাষে পূরণ হচ্ছে পরিবারের তেলের চাহিদাও।’
উপজেলার মালগাঁও গ্রামের কৃষক আবু হাসনাত জানান, আগে তিনি শুধু আলু চাষ করতেন। কিন্তু তিন বছর ধরে সরিষা চাষ করে আলুর চেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। এ কারণে এবার দুই একর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। যা ফলন পেয়েছেন তাতে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মাইজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে বেশি।’
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘অনুকূল আবহাওয়া ও নিবিড় পরিচর্যার কারণে এবার সরিষার ভালো ফলন পেয়েছেন চাষিরা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদও হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ এরই মধ্যে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে।’