গাজীপুরের সদর থানা এলাকার দেশিপাড়া থেকে গত বুধবার ফেরদৌসি (৩০) ও তাঁর মেয়ে তাসমিয়ার (৫) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের সূত্র উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত শুক্রবার সকাল ও দুপুরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহতের নাম ফেরদৌসি গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার নরুন বাজার এলাকার বাসির উদ্দিন বেপারীর মেয়ে। গ্রেপ্তার দুজন হলেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার সালদিয়া গ্রামের ছাত্তার খানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম খান (২১) ও একই এলাকার মনির হোসেনের ছেলে মো. মহিউদ্দিন ওরফে বাবু।
গতকাল শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান জিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) মো. জাকির হাসান। তিনি বলেন, নিহত ফেরদৌসি গার্ডিয়ান ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিনি গ্রেপ্তার বাবুর স্ত্রী লিমাকে একই কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। চাকরি পাওয়ার পর বাবুর সঙ্গে লিমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
জাকির বলেন, এ ঘটনায় বাবু ফেরদৌসিকে দায়ী মনে করেন। এ কারণে প্রতিশোধ নিতে তিনি ফেরদৌসিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ কাজে তার সহযোগী হিসেবে ফেরদৌসির পূর্বপরিচিত ও বিমাগ্রহীতা জাহিদুল ইসলাম খানকে বেছে নেন। ঘটনার দিন গত বুধবার বিকেলে নতুন একজনকে বিমা করিয়ে দেবেন বলে ফেরদৌসিকে দেশিপাড়ায় আসতে বলেন জাহিদুল।
জিএমপির উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ফেরদৌসি ওই দিন সন্ধ্যার পরে নির্দিষ্ট জায়গায় জাহিদুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় তাঁর মেয়ে তাসমিয়া সঙ্গে ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর জাহিদুল ও বাবু ফেরদৌসির গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে ফেরদৌসি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তাসমিয়া ঘটনা দেখে ফেলায় এবং কান্নাকাটি শুরু করলে জাহিদুল শিশু তাসমিয়ার গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। পরে তাঁরা একটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান।
জাকির হাসান বলেন, পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে ফেরদৌসির ভাই ইজ্জত আলী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেন।
জাকির বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের পর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার সালদিয়ার নিজ বাড়ি থেকে প্রথমে জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় জাহিদুলের হাতে কাটা দাগ দেখতে পাওয়া যায়। পরে জাহিদুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং তাঁর সহযোগী বাবুর নাম প্রকাশ করেন। বাবুকেও নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবা আসামিদের গাজীপুর আদালতে তোলা হবে।