হোম > ছাপা সংস্করণ

ফুটবলার থেকে ফুটবল গবেষক শহিদুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে হঠাৎ করেই ফুটবল ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে গিয়েছিল শহিদুল ইসলাম জুয়েলের। অগ্রণী ব্যাংক ফুটবল দলের অধিনায়ক থাকাকালীন চোটের কারণে ২০০৭ সালে যখন ফুটবলকে বিদায় জানালেন শহিদুল, তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৭। বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলের ৯ বছরের অভিজ্ঞতা হঠাৎই যেন মিশে গেল ধুলায়!

ফুটবল তাঁকে হতাশ করলেও শহিদুল ফুটবলকে ছাড়েননি। অকালে ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার ক্ষোভ থেকে জন্ম নিল জেদ। প্রিয় খেলাটাকে দেখতে শুরু করলেন ভিন্ন এক দৃষ্টি থেকে। সেই দৃষ্টিতে ছিল বিজ্ঞান, ছিল গবেষণার অসংখ্য বিষয়। নিজের কৌতূহল থেকে জন্ম নিয়েছে একের পর এক গবেষণা। ফুটবলার শহিদুল এখন ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়া প্রসিদ্ধ ফুটবল গবেষক। বাংলাদেশে ফুটবলার থেকে ফুটবল গবেষক হওয়ার এই ঘটনা ব্যতিক্রম বটে।

খেলার পাশাপাশি শহিদুল পড়াশোনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। স্নাতক-স্নাতকোত্তরে বিষয় ছিল প্রত্নতত্ত্ব। ফুটবলকে অকাল বিদায়ের পর জীবিকার তাগিদে ২০০৯ সাল থেকে শুরু করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের চাকরি। দুই ধাপে পদোন্নতি পেয়ে শহিদুল এখন কর্মরত কেন্দ্রের উপপরিচালক পদে। চাকরির ফাঁকেই ২০১২ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে বেনারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেকর্ড মার্কসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে অর্জন করেছেন শারীরিক শিক্ষার ওপর দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। জার্মানির লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করেছেন ডিপ্লোমা। ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির বিষয়ও ছিল। ডক্টরেট ডিগ্রিতে ফুটবলার শহিদুল হয়ে গেলেন ড. শহিদুল ইসলাম জুয়েল।

পিএইচডির পর থেকেই শহিদুলের নতুন নেশা, গবেষণা। বিশ্বের নামীদামি জার্নালে এখন পর্যন্ত তাঁর ২৭টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। ১২২টি গবেষণাপত্রে উদ্ধৃত বা ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর রেফারেন্স। বিশ্ববিখ্যাত স্কোপাস ও  ওয়েব অব সায়েন্স ইংডেক্সিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে প্রবন্ধ। বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক কোচ ও বন্ধু নুরুজ্জামান নয়নের সঙ্গে যৌথভাবে লিখেছেন সৌদি জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনের জন্য। জার্নালের ২২তম ভলিউমে নয়ন ও শহিদুলের ‘পেনাল্টি ঠেকানোর গোপন উপায়’ নামক গবেষণাটি বেশ পঠিত একটি।

ফুটবলের ক্যারিয়ারটা লম্বা করতে না পারার আক্ষেপ থেকেই শহিদুল তাঁর অধিকাংশ গবেষণা করেছেন প্রিয় খেলাকে ঘিরেই। ফুটবল কোচিংয়ে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে তাঁর গবেষণা অন্তত ১৮টি গবেষণায় উদ্ধৃত হয়েছে। মজা করেই জানালেন, ‘মাঠে নামলেই আমার মাথায় ঘুরতে থাকে গবেষণা। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ঘেঁটেও আমি প্রাচীন বক্সিং নিয়ে লিখেছি। আগ্রহ ছিল। সেখান থেকেই গবেষণার শুরু।’

গবেষণা ছাড়াও আরেকটি নেশা আছে শহিদুলের, ফুটবল কোচিং। এএফসি ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ তিনি। বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির অধীনে ভবিষ্যতের কোচদের প্রশিক্ষণ দেন তিনি। মোহামেডানের সাবেক কোচ শন লেনের অধীনে কাজ করেছেন সহকারী কোচ হিসেবেও। কোচ হিসেবে কাজ করার স্বপ্নটা এখনো আছে শহীদুলের। তবে বড় বাধা ঢাকা থেকে সিলেটের দূরত্ব আর পেশা। স্থায়ী চাকরি ছেড়ে কোচিংয়ের পথে পা বাড়াবেন কি না তা নিয়ে মনে আছে দোটানাও। বললেন, ‘একটা দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের সবার আগে চিন্তা করতে হয় রুটি-রুজি। আমারও তো পরিবার আছে। গবেষণা-কোচিং নেশা হতে পারে কিন্তু আগে তো চাকরি করতে হবে। যদি ঢাকাতে এমন চাকরি পাই, তখন হয়তো পুরোদমে কোচিংয়ে মন দিতে পারব।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ