হোম > ছাপা সংস্করণ

‘কাস্টমার দাম শুনেআর কথা বলে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বেচাবিক্রি কেমন? এ প্রশ্ন শুনেই রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজিবিক্রেতা মো. সুমনের জবাব: ‘কাস্টমার আসে, সবজির দাম জানার পর আর কোনো কথা না বলে চলে যায়। দুই দিনের ব্যবধানে সবজির দাম ডাবল হয়ে গেছে। মানুষের কেনার সামর্থ্য নেই। পেঁপে ছাড়া কোনো সবজির কেজিই পঞ্চাশ টাকার কমে পাবেন না। আগে যারা তরকারি কিনে খাইত, তারা এখন ডাল আর আলুভর্তা খাচ্ছে।’

সুমনের পাশের দোকানেই সবজি কেনার জন্য দরদাম করছিলেন পোশাক শ্রমিক রিনা খাতুন। তিনি বলেন, ‘কাঁচকলা, পেঁয়াজ, রসুন ও ডিম কিনলাম। রসুন বাদে সব কটিরই দাম বেশি। মাছ, গোশত তো কেনার সামর্থ্য নেই। ডিমই ছিল শেষ ভরসা। যে ডিম গতকাল কিনেছি ৯০ টাকা ডজন, আজ সেই ডিম কিনলাম ১১০ টাকা। জিনিসের দাম বাড়ে, আমাদের বেতন তো বাড়ে না, ভাই।’

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনে করছে, জ্বালানি তেলের প্রভাব সব জায়গায় পড়েছে। সংগঠনের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘বাজারে আগে থেকেই আগুন লেগে ছিল। আর জ্বালানির দাম বাড়ার প্রভাবে তা দাবানলে পরিণত হয়েছে।’

রাজধানীর আজিমপুরের নিউ পল্টন এলাকার গৃহবধূ সোনিয়া বেগম গতকাল সোমবার নিউমার্কেট থেকে ৬৫০ টাকায় ১০ কেজি মিনিকেট চাল কেনেন। ১ নভেম্বর একই ধরনের ১০ কেজি চাল ৬০০ টাকায় কিনেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাজারে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাগো মতো মানুষের অনেক সমস্যা। কয়দিন পরপরই শুধু দাম বাড়ে।’

তবে দোকান মালিক সারোয়ার আলমের দাবি, সোনিয়া বেগম ১ নভেম্বর যে চাল কিনেছিলেন, গতকাল সেটির চেয়ে উন্নতমানের চাল নিয়েছেন। এ কারণে কেজিপ্রতি ৫ টাকা দাম বেশি। তবে আগে থেকেই অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে।

পুরান ঢাকার বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ বলেন, আগে কুষ্টিয়া থেকে ৫০ কেজি ওজনের ২৬০ বস্তা চাল ঢাকায় আনতে পরিবহন ভাড়া দিতে হতো ১৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ১৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এতে বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি এক টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

গতকাল পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৫৪-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৫৬-৬২ টাকা এবং বিআর-২৮ (লতা নামে পরিচিত) প্রতি কেজি নতুন ৪১-৪৪ টাকা এবং পুরোনো ৪৬-৪৮ টাকায়। আগে প্রতিটি চালের দামই কেজিপ্রতি এক টাকা কম ছিল বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

পুরান ঢাকার বাংলাদেশ মাঠ সংলগ্ন এলাকার বাজার থেকে ৫ কেজি আলু ১১০ টাকায় কেনেন বংশালের বাসিন্দা ইমরান হোসেন। তিনি জানান, খুচরা প্রতি কেজি আলু কিনতে গেলে দোকানি ২৫ টাকা দাবি করেন। এ কারণে পাইকারি দোকান থেকে তিনি ৫ কেজি কিনেছেন।

মিটফোর্ড এলাকার সার্জিক্যাল পণ্যের ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, এক সপ্তাহ আগে তিনি প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকায় কিনেছিলেন, যা গতকাল ৭০ টাকায় কিনতে হয়েছে। ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকায় এবং ফুলকপি একটি ৪৫ টাকায় কিনেছেন তিনি।

কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যে ফুল কপি গত সপ্তাহে ২০-২২ টাকা বিক্রি হয়েছে, গতকাল সেটা আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। টমেটো ছিল ৮০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, শিম ছিল ৭০-৮০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। বেগুন ছিল ৪০-৫০ টাকা কেজি, এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। এভাবে দাম বেড়েছে বরবটি, পটোল, আলুসহ অন্যান্য সবজিরও।

পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সবজির দাম কিছুটা বাড়লেও ভাড়া বৃদ্ধির প্রভাব কাঁচাবাজারে এখন পর্যন্ত খুব বেশি পড়েনি বলে মনে করেন কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সেক্রেটারি মো. লোকমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, গাড়িভাড়া বৃদ্ধির কারণে কাঁচা পণ্যের দামের ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, সেটা পরিষ্কার বোঝা যাবে আরও দুদিন পর থেকে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ