হোম > ছাপা সংস্করণ

আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে!

অরুণ কর্মকার

আওয়ামী লীগ নিঃসন্দেহে অনেক বড় দল। কিন্তু তারা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। তাদের মূল শক্তি এখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। সরকারকে ব্যবহার না করে আওয়ামী লীগ বিএনপির কাছে টিকতে পারবে না। তাঁরা মনে করেন, এই বাস্তবতা আওয়ামী লীগও জানে। সেখানেই আওয়ামী লীগের ভয়।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখন বেশ উৎফুল্ল। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করার পর এখন দলটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আস্থাও বেড়েছে। যদিও বিভাগীয় সমাবেশগুলোর একটিও তারা নির্বিঘ্নে করতে পারেনি। তবু তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে যে তারা সফল। রাজনৈতিক কৌশলে অনেকখানি এগিয়ে গেছে তারা। এর ধারাবাহিকতায় তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য (দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন) অর্জনও সম্ভব হবে।

বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশের পর ঢাকায় বিএনপির বিভিন্ন স্তরের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তাঁরা এই মূল্যায়ন ও আস্থার মনোভাব প্রকাশ করেছেন। ঢাকার বাইরেরও কয়েকজন মধ্যম সারির নেতাও একই মত প্রকাশ করেছেন।

দলটির নেতা-কর্মীরা মনে করেন যে তাঁদের রাজনৈতিক কর্মসূচির সাফল্য দেখে আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে। এ বিষয়টি বিএনপির জন্য এখন আরও বেশি উদ্দীপক হয়ে উঠেছে। কীভাবে কোন ঘটনায় তাঁদের মনে হলো যে আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে! এ প্রসঙ্গে তাঁদের স্পষ্ট জবাব হলো—ভয় না পেলে কেউ এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে না, যেভাবে আওয়ামী লীগ করেছে। নেতাদের এলোমেলো কথাবার্তা বাদ দিলেও স্বয়ং আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন, সেটাও ভয় পাওয়ারই বহিঃপ্রকাশ বলে তাঁদের স্থির বিশ্বাস।

প্রতিটি বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রধান প্রধান যাতায়াত ও গণপরিবহনব্যবস্থা অচল করে দেওয়ার ব্যাপারেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিশ্লেষণ স্পষ্ট। তাঁদের কথায়, ধরুন, যুক্তির খাতিরে মেনে নিলাম যে যাতায়াত ও পরিবহনব্যবস্থা অচল করার জন্য সরকার কিছুই করেনি। বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরাই সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু দেশের কোনো অঞ্চলে যখন যাতায়াতব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে গণপরিবহনের ধর্মঘট বা সাধারণ বিশৃঙ্খলার কারণে, তখনো তো সরকার, স্থানীয় প্রশাসন পরিবহন নেতাদের ডেকে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। এ ক্ষেত্রে কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতেই সবার কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে প্রতিটি অচলাবস্থার পেছনে সরকারের ইন্ধন ছিল। এই অবস্থার পরও দূরদূরান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেভাবে এবং যতসংখ্যক মানুষ সমাবেশগুলোতে যোগ দিয়েছে, তা দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করেছে। আগামী সমাবেশগুলোতেও যত বাধাই আসুক, মানুষ সমবেত হবে। এই জনস্রোত আর ঠেকানো যাবে না বলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধারণা বদ্ধমূল হচ্ছে।

কিন্তু আওয়ামী লীগ তো দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। একটানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে সাফল্যের সঙ্গে সরকার ও দেশ পরিচালনা করছে। সেই দল যখন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে, তখন বিএনপি টিকতে পারবে তো? এই প্রশ্নেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেশ আস্থাবান। তাঁদের ব্যাখ্যা হলো, আওয়ামী লীগ নিঃসন্দেহে অনেক বড় দল। কিন্তু তারা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। তাদের মূল শক্তি এখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। সরকারকে ব্যবহার না করে আওয়ামী লীগ বিএনপির কাছে টিকতে পারবে না। তাঁরা মনে করেন, এই বাস্তবতা আওয়ামী লীগও জানে।

সেখানেই আওয়ামী লীগের ভয়। তাই আওয়ামী লীগ সরকারি প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করবেই। বিএনপি সেটা মোকাবিলা করতে চায় তাদের জনপ্রিয়তা আর জনতার শক্তি দিয়ে।

বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারাও বিরোধী দলের আন্দোলন দমনের জন্য সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করেছে। সব সরকারই করে। তারপরও আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেই সফল হয়েছে। কারণ তখন জনগণ তাদের সমর্থন করেছে। এখন আওয়ামী লীগের জনসমর্থন নেই। জনগণ আছে বিএনপির পাশে। তাই বিএনপির আন্দোলন সফল হবে বলে তাঁদের ব্যাখ্যা ও বিশ্বাস।

পাঁচটি বিভাগীয় শহরে জনসমাবেশের পর তাদের এই বিশ্বাস আস্থায় পরিণত হয়েছে।

বিভিন্ন পেশাজীবী গোষ্ঠীর মধ্যে বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরাও এখন এ আস্থায় উজ্জীবিত। তাঁরা তাঁদের এই আস্থার বার্তা ছড়িয়ে দিতে মাঠে নেমেছেন। আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের একনিষ্ঠ সমর্থকদের কাছে গিয়েও তাঁরা নিজেদের আস্থার বিষয়ে আলোচনা করছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের সমর্থকদের যে অবস্থান বদলে ফেলার সময় এসেছে, বিএনপি নেতৃত্বের সঙ্গে যে তাঁদের এখনই যোগাযোগ শুরু করা উচিত, সে কথাও তাঁরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বলছেন।

তবে ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে দেশ চলবে বলে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য সম্পর্কে দলের কোনো স্তরের আস্থাবান নেতা-কর্মী স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেন না। তাঁদের অনেকে মনে করেন, দলের নেতাদের ওই বক্তব্য রাজনৈতিক কূটনীতির অংশ। এই বক্তব্যের উদ্দেশ্য—একদিকে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উজ্জীবিত করা। অন্যদিকে সরকার ও সরকারি দলকে বিভ্রান্ত করা বা ধাঁধায় ফেলা। বাস্তবে এটা হতে পারে বিএনপির আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের সময়। আগামী ডিসেম্বরেই সেই সময় আসবে বলে তাঁদের কেউই মনে করেন না।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ