ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়নে এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় প্রায় আট বছর ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তিন গ্রামের মানুষ। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তাটি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে শিগগির রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়নের নেহালিয়া কান্দা পাকা সড়ক থেকে চুরখাই যেতে রজনীগন্ধা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা বেহাল।
এই রাস্তা দিয়ে পশ্চিম, উত্তরপাড়া ও উইনারপাড় গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ চলাচল করেন। গত ঈদুল ফিতরের আগে রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো শুরু হয়নি।
বৃষ্টি হলেই কাদায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তাটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের হেঁটে চলাচলেও কষ্ট হয়। উত্তরপাড়ার লতিফুজ্জামান বলেন, ‘আট বছর ধরে রাস্তার এই অবস্থা। নির্বাচন এলে চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা উন্নয়নের আশ্বাস দিলেও আমাদের এখানে কোনো উন্নয়ন নেই। একটি রাস্তার জন্য তিন গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ খুব কষ্টের মধ্যে আছি।’
মো. মোতালেব হোসেন বলেন, ‘তিন গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের যাতায়াত এই রাস্তা দিয়ে। আমরা খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে চলাচল করছি। রাস্তার জন্য অনেকে আমাদের এলাকায় আত্মীয়স্বজন করতে চায় না।’
প্রতিবন্ধী রজনীগন্ধা স্কুলের গাড়িচালক আবু খালিদ বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে এই রাস্তা দিয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পিকআপ গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করছি। বর্ষাকালে রাস্তা দিয়ে কোনোভাবেই যাওয়া যায় না। শুকনার সময়ও অনেক কষ্টে গাড়ি চালাতে হয়। রাস্তাটা সরু এবং ভাঙাচোরা থাকে। অনেক সময় নিজেরাই মেরামত করি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসাদুল্লাহ বলেন, দরপত্র হওয়ার পর কাজের জন্য বালুও আনা হয়েছিল ঈদের আগে। বৃষ্টিতে প্রায় অর্ধেক বালু নদীতে চলে গেছে। এখন ঠিকাদারের কোনো হদিস নেই। রাস্তাটা না হওয়ার কারণে এলাকার মানুষ খুব ভোগান্তিতে আছে।
ভাবখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুছ সাত্তার সোহেল বলেন, ‘এই রাস্তাটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা কষ্টের মধ্যে আছে, সেটি অবগত রয়েছি। ঈদের পরে মালামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদার কাজ শুরু করতে বিলম্ব করছেন। আশা করছি, আগামী সপ্তাহ থেকে ঠিকাদার কাজ শুরু করবেন।’
সদর ইউএনও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সবেমাত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছি। গ্রামীণ উন্নয়নগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। সরকার গ্রামকে শহরে রূপান্তর করছে। সেই লক্ষ্যে আমরাও কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলা সদরে যতগুলো কাজ নানা কারণে স্থগিত রয়েছে সেগুলো দ্রুত আমরা শেষ করব।’