নীলফামারীর সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া ও ঘৃণাই করতোয়া বাঁধের মাটি চুরি করে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া এই মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে শহরের বিভিন্ন স্থাপনায়। এতে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে শহর রক্ষা বাঁধ। এ ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সৈয়দপুরের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রাইফুল হাসান রনি বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাঁধের মাটি যারা চুরি করছে তাদের চিহ্নিত ও চোরের হাত থেকে মাটি রক্ষা করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা যায়, খড়খড়িয়া নদীটি নীলফামারী জেলার সিংদই বিল থেকে উৎপত্তি হয়ে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ীর ছোট যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এ নদীর বাম তীর অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এই অংশে বিমানবন্দর, সেনানিবাস, দেশের বৃহৎ রেলওয়ে কারখানাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। অন্যদিকে, ঘৃণাই করতোয়া নদীর এক কিলোমিটারের মধ্যে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সেনানিবাসের অবস্থান।
গুরুত্বপূর্ণ এ নদী দুটির পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে কমপক্ষে ৫০টি স্থানে মাটি চুরি করছে চক্রটি। তারা এ কাজে ব্যবহার করছে ট্রাক্টর, ট্রলি ও ডাম্প ট্রাক। মাটি চুরির কারণে বর্ষাকালে বাঁধটি বন্যার তোড়ে ভেঙে গেলে ওই অংশ পানিতে তলিয়ে যাবে। বিশেষ করে ভৌগোলিক কারণে খড়খড়িয়া নদীর বন্যার পানির স্তর থেকে সৈয়দপুর শহরটি প্রায় এক মিটার নিচু। বাঁধে মাটি না থাকলে পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকে যাবে। হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হবে। এতে করে শহর ও গ্রাম মিলিয়ে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সৈয়দপুর পওর বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে জানান, বাঁধের মাটি পাহারা দেওয়ার মতো লোকবল নেই। চোরের হাত থেকে রক্ষা মাটি রক্ষা করতে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের প্রতি জনস্বার্থে সরকারের সম্পদ রক্ষায় ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান তিনি। ঘটনাস্থলে পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিও অনুরোধ জানান এ কর্মকর্তা।