হাটভরা মানুষ। চারদিকে কোলাহল। বিভিন্ন দোকানে উচ্চ শব্দে বাজানো হচ্ছে গান। সকাল-সন্ধ্যা মানুষের কোলাহলে সরগরম পীরগাছার অন্নদানগর হাট। এ হাটের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে জোড়া বট-পাকুড়ের গাছ। আর তাতে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক শ পাখি। এক যুগের বেশি সময় ধরে পাখিগুলো মানুষের কোলাহল উপেক্ষা করে এই গাছে বসবাস করছে।
সকাল হলে পাখিগুলো ঝাঁক বেঁধে খাবারের সন্ধানে বের হয়ে সন্ধ্যায় আবার ফিরে আসে সে গাছের ডালে। প্রতিবছর অন্নদানগর হাটে বাড়ছে পাখির সংখ্যা। বর্তমানে গাছটিতে সাদা বক, কালো পানকৌড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক শ পাখি বসবাস করছে। এসব পাখি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসছে মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সচেতনতার কারণে কেউ পাখির কোনো ক্ষতি করতে পারে না।
অন্নদানগর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানুর আলম জানান, হঠাৎ এক সন্ধ্যায় পাকুড়গাছে বিভিন্ন প্রজাতির কিছু অতিথি পাখি বাসা বাঁধে। পরদিন কিছু পাখি চলে গেলেও থেকে যায় বেশ কিছু। গত এক যুগে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পাখির সংখ্যা। এখন অনেকে অন্নদানগর হাটকে পাখির হাট নামে চেনে।
স্থানীয় প্রজন্ম সমাজ সংস্কৃতি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মীর রবি জানান, এসব পাখি রক্ষায় স্থানীয় লোকজন ও হাটুরে মানুষকে সচেতন করে তোলা হচ্ছে। কেউ যেন পাখি শিকার করতে বা ঢিল ছুড়ে তাদের ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য ব্যবসায়ীরা সজাগ রয়েছেন। একবার কয়েকজন ব্যবসায়ী বট-পাকুড়গাছটি কাটার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরে অধিকাংশ ব্যবসায়ী এতে বাধা দেন। তখন খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে গাছ কাটা বন্ধ করে দেন এবং গাছটি পাখিদের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করেন।