সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে একই ব্যক্তি শিক্ষকতা করছেন দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। টানা ১৬ বছর এভাবে চলার পর নজরে আসায় নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ।
নিয়ম লঙ্ঘন করা এই শিক্ষকের নাম মোছা শাহানারা খাতুন। তিনি একটিতে শিক্ষকতা করছেন সহকারী শিক্ষক হিসেবে। অন্যটিতে প্রভাষক হিসেবে। দুটিই এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান।
শাহানারা খাতুনের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর ছোট বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি ২০০১ সাল থেকে বাঘারপাড়া উপজেলার পাঠান পাইকপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে সরকারি বেতন–ভাতাও নিয়মিত পাচ্ছেন তিনি। এরই মধ্যে ২০০৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার ইছালী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন শাহানারা। সেখানেও তিনি কর্মরত আছেন অদ্যাবধি।
যশোর সদরের ইছালী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরে আলম সিদ্দিকী মিলন বলেন, ‘শাহানারা খাতুন ২০০৪ সাল থেকে আমাদের কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত। প্রথম থেকেই দেখতাম তিনি নিয়মমাফিক কলেজে আসতেন না । আবার যেদিন আসতেন সেদিন স্বাক্ষর করে চলে যেতেন। ২০১৯ সালে আমরা জানতে পারি তিনি বাঘারপাড়ার পাঠান পাইকপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।’
অধ্যক্ষ নুরে আলম সিদ্দিকী মিলন আরও বলেন, ‘বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আমরা একাধিক সভা করেছি। তাঁর কাছে লিখিতভাবে জবাব চাওয়া হয়েছে এবং এনওসি অব্যাহতিপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক শাহানারা খাতুন অব্যাহতিপত্র না এনে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার পোদ্দার স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র নিয়ে আসেন। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার পোদ্দার স্বাক্ষরিত ওই প্রত্যয়ন পত্রে লেখা ছিল, শাহানারা খাতুন অত্র বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে থাকলে তাহলে আমার বা স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি নেই।’
এদিকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি সদর উপজেলার ইছালী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়েছে। শাহানারা খাতুন সেখানে বিনা বেতনে প্রায় ১৬ বছর ধরে চাকরিরত রয়েছেন।
শিক্ষক শাহানারা খাতুন বলেন, ‘আমি স্কুল ও কলেজ দুটিতেই কর্মরত আছি। যেহেতু কলেজটি আমার বাড়ি থেকে কাছে সুতরাং সেখানেই চাকরি করতে চাই। এত দিন কলেজটি এমপিওভুক্ত ছিল না। যেহেতু আমি একজন নারী, সেদিকটি বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ আমাকে সুযোগ করে দেবেন।’