ইমানের পর নামাজ হলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তবে দুঃখজনক সত্য হলো, অধিকাংশ মানুষ সালাত আদায়ে উদাসীন। কেউ একেবারেই আদায় করে না, কেউ আদায় করলেও চরম পর্যায়ের অনীহা নিয়ে আদায় করে। নামাজের নির্দিষ্ট নিয়মগুলো সঠিকভাবে পালন করে না। খুব কমসংখ্যক লোক নামাজ পূর্ণ নিয়ম মেনে সুন্দর করে আদায় করে।
নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব হলো, নামাজের ফরজসমূহ আদায় করার সময় শান্ত হয়ে অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে আদায় করা; মোটেও তাড়াহুড়ো না করে প্রতিটি ফরজ সময় লাগিয়ে বিনয় ও নম্রতার সঙ্গে আদায় করা। মুরগি যেভাবে খাওয়ার সময় খুব দ্রুত খাবারে ঠোকর দেয়, আমাদের রুকু-সিজদাগুলো তেমন হলে তা আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে না।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার নবী (সা.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। কিছুক্ষণ পর এক লোক এসে নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে তিনি সোজা নবীজির কাছে এসে সালাম দিলেন। নবীজি তাঁকে বললেন, ‘যাও আবার নামাজ পড়ে এসো।
তোমার নামাজ হয়নি।’ লোকটি চলে গিয়ে ফের নামাজ পড়লেন। নামাজ পড়ে এসে সালাম দিলেন। নবীজি সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, ‘যাও আবার নামাজ পড়ে এসো। তোমার নামাজ হয়নি।’ এভাবে তিনবার হলো। এবার তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহর শপথ, আমি এর চেয়ে সুন্দর করে নামাজ পড়তে পারি না। আমাকে শিখিয়ে দিন।’ তখন নবীজি তাঁকে বললেন, ‘মনোযোগ দিয়ে শোনো। যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে, তাকবির বলবে। এরপর যতটুকু তোমার সাধ্যে কুলায়, কোরআন পড়বে। এরপর রুকুর তাকবির বলে রুকুতে যাবে। একেবারে শান্ত হয়ে রুকু করবে। এরপর সিজদার তাকবির বলে শান্তভাবে সিজদা করবে। এভাবেই পুরো নামাজ আদায় করবে। (বুখারি: ৭৯৩)
লেখক: আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক