ফেনীতে এক প্রসূতির অপারেশনের সময় পেটে গজ ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় এক মাস আগের এই ঘটনায় তাঁর নানা রকম সমস্যা দেখা দিলেও বিষয়টি শনাক্ত হতে দেরি হয়। বর্তমানে তাঁর অবস্থা গুরুতর।
এদিকে আর্থিক সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে না পেরে ওই গৃহবধূ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফেনী শহরের শান্তি কোম্পানি এলাকার গৃহবধূ সাবরিনা আক্তার প্রসব বেদনা নিয়ে গত ৪ নভেম্বর শহরের মিজান রোডের ডায়াবেটিস হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসক সায়রা শরিফা শিল্পীর তাঁর সিজার করেন। শিল্পী ঢাকার মহাখালীর ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক। সপ্তাহে একদিন তিনি ফেনীতে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। কিন্তু সিজারের সময় প্রসূতির পেটে গজ ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করা হয়।
ভুক্তভোগীর মা নাছিমা বেগম বলেন, তাঁর মেয়েকে নিয়ে পাঁচ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরলে দুই দিন পর থেকে প্রচণ্ড জ্বরসহ তলপেটে তীব্র ব্যথা হয়। তা ছাড়া মূত্রনালি থেকে পুঁজ ও রক্ত বের হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় অসংগতি ধরা পড়ে। আলট্রাসনোগ্রাফির সনোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. দেবশ্রী চক্রবর্তীর দেওয়া প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
ডা. দেবশ্রী চক্রবর্তী জানান, পেটে রক্ত জমাট বাঁধা একটি বস্তু রয়েছে।
বর্তমানে রোগীর জ্বর, তীব্র পেট ব্যথা ও সেলাই স্থানে পচে পুঁজ বের হওয়াসহ প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এমন ঘটনায় চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগীর স্বামী মাহমুদুল হাসান শুভ।
মাহমুদুল হাসান শুভ জানান, তিনি অনলাইন পার্সেল ডেলিভারি ব্যবসা করেন। একবার সিজারে ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। বর্তমানে চিকিৎসকেরা আবারও অপারেশন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন। এবারও অপারেশনে প্রচুর অর্থ লাগবে। এখন এত টাকা তিনি কোথায় পাবেন। এ নিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
তবে মুঠোফোনে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গাইনি চিকিৎসক ডা. সায়রা সরিফা শিল্পী। তিনি বলেন, রোগীর শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। এখানে তাঁর অপারেশনে কোনো ভুল ছিল না। অন্য কোনো সমস্যার কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে।
সিভিল সার্জন ডা. রফিক উস সালেহীন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।