লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চাঁদাবাজি ও মারধরের ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন শাহানারা বেগম (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নারী। মামলাগুলো প্রত্যাহারে তাঁকে গত কয়েক দিন থেকেই অব্যাহত চাপ ও হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত মো. মিরাজ (৩৫) ও তাঁর লোকজন। উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের পশ্চিম চরপাতা গ্রামের মজুমদার বাড়ির ঘটনা এটি। তবে গতকাল শুক্রবার দুপুরে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মো. মিরাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বাড়ির আব্দুর রব মিয়ার ছেলে মো. মিরাজ। বাড়িটিতে ১০-১২টি পরিবারের বসবাস হলেও কেউই তাঁর ভয়ে কথা বলতে নারাজ। এলাকায় পরিচিতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে। গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য (মেম্বার) হিসেবে ভোট করে পরাজিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে হত্যা, চাঁদাবাজি, মারধর, দাঙ্গাহাঙ্গামাসহ বিভিন্ন ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় জিডি ও আদালতে মামলার সংখ্যা অন্তত ২০টি।
শাহানারা বেগম (৬০) বলেন, `আমার স্বামী আব্দুল মান্নান প্রবাসে থাকা অবস্থায় ১৯৯২ সনে মারা যান। শিশু সন্তানদেরকে আমি অনেক কষ্টে মানুষ করি। এক ছেলে মুফতি হিসেবে চট্টগ্রামে কর্মরত ও অপর ছেলে প্রবাসে রয়েছে। জায়গা-জমি নিয়ে মিরাজ পরিবারের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলছে। এ পর্যন্ত মিরাজ, তাঁর বাবা আব্দুর রব ও তাঁর পক্ষের দুর্বৃত্তরা আমার ওপর অন্তত ৩৫-৪০ বার হামলা চালিয়েছে। মারধরের আঘাত নিয়ে অসংখ্যবার হাসপাতালে গিয়েছি। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে থানায় ২৫-৩০টি জিডি ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি। প্রতিটি তদন্তেই প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু এ পর্যন্ত তাঁদের দৃশ্যমান কোনো শাস্তি না হওয়ায় আরো বেপরোয়া হয়ে ঊঠেছে। এ অবস্থয় আমি আতঙ্কগ্রস্ত ও ভীতিকর অবস্থার মধ্যে আছি। আমি ও আমরা বাঁচতে চাই। শান্তিতে থাকতে চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে মো. মিরাজ বলেন, জমি নিয়ে আমাদের দু’পরিবারে বিরোধ ও মামলা চলছে। আমাদেরকে তাঁরা অন্যায়ভাবে হয়রানি করছে। মিথ্যা কথা রটিয়ে সম্মানহানি করে চলেছে।
চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মামুনুর রশিদ বলেন, মিরাজ আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। তিনি কোনো পদে নেই। নেতা না হলেও চালচলনে তিনি নেতা। ওই গৃহবধূর পরিবারের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে অনেক আগে জানানো হয়েছিল। তবে সম্প্রতি কোনো বিষয়ে অবগত নই।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, জায়গা-জমি নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। মিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই নারী হুমকির বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।