সরিষাখেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। এ বছর সরিষার চারা ভালো হলেও তিন-চার পাতা গজানোর পর হানা দিচ্ছে কাটুই পোকা। এমনই চিত্র দেখা গেছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরিষাখেতে। এতে ফলন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন উপজেলার কৃষকেরা। তবে সমস্যা সমাধানে মাঠপর্যায়ে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে এবং নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, পোকা সরিষার চারাগাছ কেটে ফেলেছে। যেখানে অপেক্ষাকৃত চারার সংখ্যা কম, সেই জায়গাতে পোকার আক্রমণ বেশি। বিশেষ করে উপজেলা সদর, কাঞ্চনপুর ও ফুলকি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পোকার আক্রমণ বেশি লক্ষ করা গেছে।
উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জিকাতলীপাড়া এলাকার সরিষাচাষি বিশ্বনাথ সরকার বলেন, ‘আমি ১৫০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। আমার প্রায় জমিতে পোকা ধরেছে। যেখানে সরিষার চারা কম, সেখানেই বেশি কেটেছে।’ এ অবস্থায় সরিষার আবাদে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
একই এলাকার রঞ্জন সরকার বলেন, ‘আমি ১০০ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। পোকা জমির প্রায় সব চারা কেটে ফেলছে। জমিতে কীটনাশক দেওয়ার পরও থামছে না পোকার আক্রমণ।’
রাশড়া গ্রামের চাষি নাজু মিয়া বলেন, ‘আমার ২০০ শতাংশ জমিতে পোকা আক্রমণ করেছে। খুব আশা নিয়ে সরিষা আবাদ করেছি। কীটনাশক ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না। পুনরায় সরিষা ছিটাব, সে উপায়ও নেই।’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছিল। এ বছরও ৪ হাজার ৮২০ হেক্টরে আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯০ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজনিন আক্তার বলেন, ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯০ ভাগ জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় সরিষা চারা গাছে কাটুই পোকার আক্রমনের খবর অনেকেই জানাচ্ছেন। কাটুই পোকা সাধারণত দিনের বেলা মাটির নিচে থাকে। রাতে এরা চারাগাছের গোড়া কাটে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পোকা দমনের জন্য চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।