মন্ত্রী-এমপিদের সই জাল করে ভুয়া ডিও লেটার (সুপারিশপত্র) তৈরি করতেন তাঁরা। সেই সুপারিশপত্র জমা দিলেই মিলবে চাকরি, হবে পছন্দ অনুযায়ী বদলির ব্যবস্থা। এমন প্রলোভন দেখিয়ে চাকরি ও বদলিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো ৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা। যদিও শেষ পর্যন্ত ভুয়া ওই ডিও লেটারে কাজ হতো না। গত চার বছরে এই প্রক্রিয়ায় শতাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করেছে চক্রটি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এ চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁর হারুন অর রশীদ, সেকেন্দার আলী এবং মাসুদ রানা। গতকাল সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের হোতা হারুনসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের চারটি ভুয়া নিয়োগপত্র, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের তিনটি আবেদনপত্র, ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষরিত ছয়টি ফাঁকা (ব্ল্যাঙ্ক) চেক, ২৪টি স্ট্যাম্প, ভুয়া ডিও লেটারসহ প্রতারণার বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন জানান, প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করতেন প্রতারকেরা। এরপর ৩-৫ লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়া হতো। ভুক্তভোগীরা যেন এ ব্যাপারে পুলিশকে কিছু জানাতে না পারেন সে জন্য তাঁদের কাছ থেকে ব্ল্যাক চেক ও স্ট্যাম্পে সই নেওয়া হতো। এরপর ভুয়া কাগজের মাধ্যমে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করতেন প্রতারকেরা। চাকরি হলে বাকি টাকা নিতেন, না হলে অগ্রিমের টাকাও ফেরত দেওয়া হতো না।
সিআইডির কর্মকর্তারা আরও জানান, চক্রের হোতা হারুন আগে একটি হজ এজেন্সিতে কাজ করতেন। পরে প্রতারণা শুরু করেন। মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য জিপগাড়ি নিয়ে এলাকায় গিয়ে মানুষকে টাকা দান করতেন তিনি। এই জালিয়াতি করে প্রতারক চক্র কী পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে, জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, করোনাকালে এই চক্রটি অন্তত ৫০ জনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।