বাগেরহাটের চিতলমারীতে কলেজছাত্রী মেয়েকে (১৭) উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় উত্ত্যক্তকারী ও তাঁর লোকজন মেয়ের বাবাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ভুক্তভোগীর ডান হাত ভেঙে গেছে ও ডান পা রক্তাক্ত জখম হয়েছে। আহত ওই বাবাকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের ওই কলেজছাত্রীকে কলেজে যাওয়া-আসার পথে একই গ্রামের ভ্যানচালক শহিদুল ইসলাম কুটি (৩৩) উত্ত্যক্ত করত। উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় গত ১৮ অক্টোবর সকালে শহিদুল ইসলাম কুটি ও তাঁর লোকজন ওই কলেজছাত্রীর বাবাকে লোহার রড ও শাবল দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
হামলায় ভুক্তভোগীর ডান হাত ভেঙে যায় ও শাবলের কোপে ডান পা রক্তাক্ত জখম হয়। এ ঘটনার চার দিন পর ২২ অক্টোবর কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় শহিদুল ইসলাম কুটিকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী বাবা আহত অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর মেজো মেয়েটি শারীরিক ও বাক্প্রতিবন্ধী। অনেক কষ্টে দুটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে মেয়েটিকে কলেজে পড়াচ্ছেন। কিন্তু অভিযুক্তদের কারণে মেয়েটির লেখাপড়া হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী বলে, 'দেশের আর দশটা মেয়ের মতো আমারও লেখাপড়ার অধিকার আছে। এখন আমি কি বখাটেদের কারণে কলেজে যেতে পারব না? '
ঘটনার পর থেকে শহিদুল ইসলাম কুটি ও তাঁর লোকজন পলাতক থাকায় তাঁদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অপূর্ব চৌধুরী বলেন, কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার বিষয়ে মেয়েটির বাবা তাঁদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা একটি সালিস-বৈঠক করেন। বৈঠকে শহিদুল ইসলাম কুটি আর কোনো দিন মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করবেন না বলে লিখিত মুচলেকা দেন। কিন্তু এর জেরে সে কলেজছাত্রীর বাবার ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার কঠোর বিচার হওয়া উচিত।
চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, তাঁরা অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা নথিভুক্ত করেছেন। আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।