প্রামেশ হাজংয়ের বয়স ৫৫ বছর। কখনো ভিক্ষাবৃত্তি, কখনোবা রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া বিভিন্ন সামগ্রী (বোতল, পলিথিন) বিক্রি করে কোনোমতে দিনাতিপাত করেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার প্রামেশ হাজং। তাঁর নেই কোনো পরিবারপরিজন। নেই মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাই বাধ্য হয়েই উপজেলার লেংগুড়া ইউনিয়নের ফুলবাড়ী এলাকায় হরিমন্দিরের এক কোণে পলিথিন টাঙিয়ে কোনোমতে পার করছেন রাত। এভাবেই ছয় বছর ধরে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সম্প্রতি তাঁর অসহায় জীবন কাহিনি উঠে আসে গণমাধ্যমে। প্রামেশ হাজংয়ের কষ্টের জীবন কাহিনি পড়েই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মানবতার ফেরিওয়ালাখ্যাত রিকশাচালক তারা মিয়া। তারা মিয়া দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল সোমবার ১৫ কিলোমিটার পথ রিকশা চালিয়ে ফুলবাড়ীতে এসে প্রামেশকে থাকার জন্য কিনে দিয়েছেন একটি চৌকি। সঙ্গে ২০ কেজি চাল, ডাল, তেল, কম্বল, চাদর ও চলার মতো কিছু টাকা।
রিকশাচালক তারা মিয়া বলেন, ‘আমি যত দিন বেঁচে থাকব, মানুষের জন্য আমার সাধ্যমতো সহযোগিতা করে যাব। আমি এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ জানাই প্রামেশ হাজংয়ের জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।’
রিকশাচালক তারা মিয়া নিজেরই নুন আনতে পান্ত ফুরোই। তবুও মানুষকে সহযোগিতা করাই যেন তাঁর ধর্ম। তাই তিনি চান না, অর্থের অভাবে কারও পড়ালেখা বন্ধ হোক।
তারা মিয়া বলেন, ‘সারা দিন রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, তা থেকে একটি মাটির ব্যাংকে প্রতিদিন ৫০-৬০ টাকা করে সঞ্চয় করি। তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা, খাতা-কলম, বইসহ উপকরণ কিনে দিই।’