পিরোজপুরের নাজিরপুরে প্রেমে বাধা দেওয়ায় বিষপানে একসঙ্গে কিশোরী-তরুণ আত্মহত্যা করেছে। তাদের পরিবারের এ সম্পর্ক নিয়ে অসম্মতি থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের উত্তর কলারদোয়ানিয়া গ্রামের চানদকাঠী এলাকায় প্রেমিকার বাড়ির সামনে কবরস্থানে তারা বিষপান করে।
নিহত মেয়ের নাম মোসা. মরিয়া খানম (১৫)। সে ওই গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সে উপজেলার মুগারঝোর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী।
আর নিহত ইয়াছিন তালুকদার (১৮) নেছারবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের উলিবুনিয়া গ্রামের মো. হাফিজ তালুকদারের ছেলে। ইয়াছিন তাঁর বাবার সঙ্গে ধান-চালের ব্যবসা করতেন।
নিহতরা সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয়।
নিহত ইয়াছিনের বাবা বলেন, তাঁর ছেলে ৩-৪ দিন আগে তাঁর ফুপা (ভগ্নিপতি) মোজাম্মেল হক হাওলাদারের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফুপাতো ভাই ছাব্বিরের সঙ্গে তার দোকানে ঘুমাতে যায়। কিন্তু গরমের কথা বলে সেখান থেকে বের হয়। রাত ৩টার দিকে ইয়াছিনের ফুপু (বোন) ছাবিনা ইয়াছমিন ফোন করে জানান, ইয়াছিন ও বাড়ির পাশের এক মেয়ে একসঙ্গে বিষপান করেছে।
নিহত মারিয়া খানমের মা শামীমা নাছরিন বলেন, তাঁর মেয়ে মারিয়া ওই রাতের খাবার খেয়ে ১০টার দিকে তার কক্ষে ঘুমাতে যায়। রাত ২টার দিকে বাড়ির সামনের কবরস্থান থেকে বাঁচাও বাঁচাও বলে ডাক-চিৎকার পাই। পরে সেখানে গিয়ে দেখি মারিয়া ও ইয়াছিন অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
নিহতদের পরিবার জানায়, তাদের হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মারিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আর পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর রাতে ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাক্তার অসিত মিস্ত্রি বলেন, মারিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আর ওই দিন ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে বসে ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, মারিয়ার বাবা বাড়িতে থাকেন না। মা শামীমা নাছরিন মেয়ের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ান এবং গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেয়েকে গালমন্দ করেন। এর জেরে প্রেমিক-প্রেমিকা একসঙ্গে আত্মহত্যা করে।
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, প্রেমিক-প্রেমিকা একই সঙ্গে বাড়ির সামনের কবরস্থানে গিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার কারণ নিয়ে নিহতদের পরিবারের কেউ মুখ খুলছেন না। তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।