মৃদু বাতাসে উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা। এ দৃশ্য দেখে ছুটে আসছে শিশু, কিশোরসহ নানা বয়সের মানুষ। পছন্দ অনুযায়ী যে যার মতো পতাকা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে মৌলভীবাজারের এ মাসে বেড়েছে পতাকা বিক্রির ধুম। শহরের সড়কগুলোতে ফেরিওয়ালাদের আনাগোনা বেড়েছে।
শহরজুড়ে দেখা গেছে, সরু একটি বাঁশের সঙ্গে সাঁটানো রয়েছে স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত জাতীয় পতাকা। পতাকার আদলে বিভিন্ন ধরনের ফিতা এবং মাথা ও হাতে ব্যবহৃত ব্যান্ডও রয়েছে। অনেকে এগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে কথা হয় পতাকা বিক্রেতা যুবক নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, ফরিদপুর থেকে তাঁরা ৩০ জনের একটি দল পতাকা ফেরি করে বিক্রি করতে এসেছেন। ১০ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে পতাকা বিক্রি করে আসছেন তিনি।
বাঁশে সাঁটানো রয়েছে ছোট-বড় মধ্যম সাইজের পতাকা। দামও একেক রকম। বড় পতাকার মূল্য চান ৩০০ টাকা, মধ্যম ২৫০ ও ছোট ১৫০ টাকা। তবে ক্রেতারা দরদাম করে কেনেন পতাকা। এ ছাড়াও ছোট পতাকা ১০ টাকা, মাথার ফিতা ১০ টাকা আর হাতের ব্যান্ড বিক্রি করছেন ৫০ টাকা করে। গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি করছেন বলে জানান এই বিক্রেতা।
পতাকা নিতে আসা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী পূণম বলে, ‘চারটি ছোট পতাকা ৪০ টাকায় কিনেছি, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ১৬ ডিসেম্বর পতাকা হাতে নিয়ে বিজয় অনুষ্ঠান দেখতে যাব।’
ব্যবসায়ী খন্দকার হেবজুল বারী বলেন, আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ১৮০ টাকা দিয়ে একটি পতাকা কিনেছি। বাসার ছোট বাচ্চাদের জন্য ছোট পতাকা, হাত ও মাথার ব্যান্ড কিনেছি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক তপন পালিত বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এ স্বাধীনতা পেয়েছি। নতুন প্রজন্মের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের বীজ বপনে সাংস্কৃতিক জাগরণ প্রয়োজন। এ জন্য শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা জরুরি। এই চর্চার মধ্য দিয়ে দেশাত্মবোধের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি মমত্ববোধ বাড়বে।