স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মেডিকেল কলেজে সমতলের ‘উপজাতি’ কোটায় ভর্তি তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতারা। গতকাল সোমবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলা বাবু সিংহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে সমতলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য আটটি কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৭৭ নম্বর কোডে প্রকাশিত তালিকায় বহিরাগত প্রার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কয়েক বছর যাবৎ এভাবে বহিরাগত প্রার্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত থাকে।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এ ধরনের অনিয়মের কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ পাঠালে ও হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। তবুও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। ফলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা হতাশাগ্রস্ত হচ্ছেন।
গত কয়েক বছর যাবৎ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ ধরনের ভুল করার কারণে অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারেনি।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় কুষ্টিয়া মেডিকেলে মো. নাজমুল ইসলাম, সাতক্ষীরা মেডিকেলে মো. সাকিব বাশার, মাগুরা মেডিকেলে খন্দকার কাশেবা কুমকুম ও কক্সবাজার মেডিকেলে নেপাল চাকমার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ আট আসনের মধ্যে এই চারজনই সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীবহির্ভূত। একাধিকবার আবেদনের পরও তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাতিলের জন্য অনুরোধ জানানোর পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পদক্ষেপ নেয়নি।
বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (বামডো) সভাপতি নুর উদ্দিন বলেন, আমরা উপজাতীয় কোটা সঠিকভাবে পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ মণিপুরি কাং ফেডারেশনের সভাপতি ইবুংহাল সিংহ শ্যামল বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়ায় ক্রুটি থাকায় দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি অসাধু চক্র এ কাজটি করছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।
বাংলাদেশ মণিপুরি এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি সাজ্জাদুল হক স্বপন বলেন, সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার শিকার না হয় এর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করি।