অবসর আল্লাহর নেয়ামত। শেষ হওয়ার পরই আমরা তার মর্ম অনুভব করতে পারি। কেউ কেউ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন, আবার কেউ সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকেন। কিন্তু যিনি প্রকৃত দায়িত্বশীল, তিনি কখনো সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকেন না; বরং সময়ের মধ্যে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। কারণ কাজ করার সুযোগ বারবার আসে না। তাই দায়িত্ব পাওয়ামাত্রই তা সম্পাদন করা প্রকৃত ইমানদারের দায়িত্ব। ইবনে ওমর (রা.) বলেন, একদা মহানবী (সা.) আমার ঘাড়ে হাত রেখে বলেন, ‘হে বৎস, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে সকালের জন্য কোনো কাজ ফেলে রাখবে না এবং সকালে উপনীত হলে সন্ধ্যার জন্য কোনো কাজ ফেলে রাখবে না। তোমার অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতার, ব্যস্ততার পূর্বে অবসরের এবং মৃত্যুর পূর্বে জীবনের মূল্যায়ন করো।’ (বুখারি)
আরেক শ্রেণির লোক আছেন, যাঁরা অবসরে থাকার ফলে কোনো কাজ ‘এখন করবেন, তখন করবেন’ বলে সময় অতিবাহিত করেন। অবশেষে যখন সর্বশেষ মুহূর্ত চলে আসে তখন তাড়াহুড়ো করে কাজটি করতে চান। কিন্তু সময়াভাবে তা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারেন না। তখন তিনি ভাবতে থাকেন, এত দিন বসেই কাটালাম, যদি কাজটি করতাম তবে আজকের এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। ফলে তিনি আফসোস করতেই থাকেন। তাই মহানবী (সা.) বলেন, ‘দুটি নেয়ামতের ব্যাপারে মানুষ অধিক প্রতারিত হয়ে থাকে। একটি সুস্থতা অপরটি অবসর।’ (বুখারি)। হাদিসে প্রতারিত হওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, সুস্থতার পর যখন ব্যক্তি অসুস্থ হয় এবং অবসরের পর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আর কিছুই করার থাকে না।
ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়