রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চিনি আমদানির জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দফায় দফায় দরপত্র আহ্বান করেছে। কিন্তু তেমন কোনো সাড়া পাচ্ছে না সংস্থাটি। ফলে টিসিবির স্বল্পমূল্যে চিনি সরবরাহে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনেক এলাকার ফ্যামিলি কার্ডধারীরা চিনি সরবরাহ পাচ্ছেন না।
টিসিবি সূত্র বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন চিনি কিনতে ২, ৩, ৪ ও ১০ মে—চার দফা আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে টিসিবি। কিন্তু চিনি সরবরাহে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া স্থানীয় বাজার থেকে আট হাজার টন চিনি কিনতে গত মে মাসে ছয় দফা দরপত্র আহ্বান করে। সেখানেও সাড়া কম। এতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বল্পমূল্যে চিনি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়েক দফা আন্তর্জাতিক বাজারে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় বাজারেও দরপত্র দেওয়া হয়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
টিসিবির পরিচালক (বাণিজ্যিক) এস এম শাহীন পারভেজ বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্রে তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া গেছে। তবে এখনো চিনি পাওয়া যায়নি। শিগগির সরবরাহ পাওয়া যাবে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় চলতি মাসে কয়েক হাজার কার্ডধারী তেল ও ডাল সরবরাহ পেলেও চিনি সরবরাহ পাননি বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুল মাদবর বলেন, এ মাসে দুই লিটার তেল ও দুই কেজি ডাল সরবরাহ দিয়েছেন ডিলাররা। তবে চিনি দেওয়া হয়নি। তাঁর এলাকায় ১৬-১৭ হাজার কার্ড রয়েছে বলে জানান তিনি।
একটি বেসরকারি চিনি পরিশোধনকারী ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেশি। ব্যাংকগুলোর ঋণপত্র খুলতে অনীহা। সরকার প্রতি কেজি চিনিতে ৩৫ টাকা মুনাফা করছে। এদিকে লোডশেডিংয়ে নাকাল জনজীবন। সব মিলিয়ে চিনি পরিশোধন ও আমদানি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
তবে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, তাঁরা টিসিবিকে নিয়মিত তেল ও চিনি সরবরাহ দিয়ে আসছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগ) মো. রুহুল আমিন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়ায় সরবরাহে তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিগগির চিনির সরবরাহ পাওয়া যাবে।