করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় মাধ্যমিকের ৯৫৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আর শ্রেণিকক্ষে ফেরেনি। আর যারা স্কুলমুখী হয়েছে, তারা বেশির ভাগ দিনই স্কুলে অনুপস্থিত থাকছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলায় মাধ্যমিকে মেয়েশিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ হাজার ৬১৮। এসব মেয়ের মধ্যে লকডাউনের সময় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৯৫৮ জনের বাল্যবিবাহ হয়েছে।
উপজেলার শিক্ষক সমিতির তথ্যমতে, সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ৭৬ জন, আনিলা জাহান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ৭১, জোড়গাছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ২৩, আয়েশা ওসমান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ৪২, হাটশেরপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ৩২, খোর্দ্দবলাইল উচ্চবিদ্যালয়ে ২৮, নিজবলাইল উচ্চবিদ্যালয়ে ২২, মাজেদা রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৬৯, ছাগলধরা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৮, কড়িতলা উচ্চবিদ্যালয়ে ২৭, রামচন্দ্রপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৩৮, আওলাকান্দি উচ্চবিদ্যালয়ে ২৩, ফুলবাড়ী গমির উদ্দিন বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৬০ জন মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে।
একইভাবে নওখিলা পিএন উচ্চবিদ্যালয়ে ১০ জন, আওচার পারা উচ্চবিদ্যালয়ে ১১, নিজাম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে ৪৩, মথুরাপাড়া বিকে উচ্চবিদ্যালয়ে ৫৪, গণকপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৭৯, কুপতলা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে ৭, ছাইহাটা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৯, কুতুবপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ৬৭, উত্তর টেংরাকুড়া উচ্চবিদ্যালয়ে ৩৪, শোনপচা উচ্চবিদ্যালয়ে ৪৮, জোড়গাছা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ২২, চালুয়াবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে ৪ এবং জামথল উচ্চবিদ্যালয়ের ৩১ জন মেয়ের বাল্যবিবাহ হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতির সারিয়াকান্দি শাখার সভাপতি কাজী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জানামতে উপজেলার ১২ ইউনিয়নের সব কাজি জন্মনিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া বিবাহ রেজিস্ট্রি করেননি। এ ঘটনা যদি ঘটেই থাকে, তাহলে গার্ডিয়ানরা ছলচাতুরী করেছেন বা বিবাহ নিবন্ধন করেননি।’
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাকী মো. জাকিউল আলম ডুয়েল বলেন, ‘বিদ্যালয় খোলার পর অনেক ছাত্রীকে ক্লাসে অনুপস্থিত দেখি। তাদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে।’