চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেলের একাংশ বাণিজ্যিক চলাচলের জন্য খুলে দিতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যেই প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রায় ৯১ দশমিক ৪১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে গত মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। গতকাল মেট্রোরেল প্রকল্পের মার্চ মাসের অগ্রগতির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরো প্রকল্পের কাজে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও, ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশে। এই অংশটি ডিসেম্বরে চালু করা হবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশনের ইলেকট্রিক এবং আর্কিটেকচারাল কাজ হচ্ছে।
পাশাপাশি স্টেশনে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ নির্মাণকাজ চলছে। তার মধ্যে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও পল্লবী স্টেশনের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ নির্মাণকাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে আছে। মেট্রোরেলের এই অংশে নিয়মিত মেট্রো ট্রেন সেটগুলোর ট্রায়াল
রান চলছে।
এদিকে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৭৭ শতাংশ। এই অংশে ভায়াডাক্ট বসানোর কাজ এবং ভায়াডাক্টের ওপর প্যারাপেট ওয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
বিজয় সরণি, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মেট্রো ট্রেনের ২৪ সেটের মধ্যে ১২টি বাংলাদেশে চলে এসেছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এগুলো চালানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আরও দুটি সেট জাপান থেকে জাহাজে বাংলাদেশে রওনা হয়েছে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ এগুলো এসে পৌঁছানোর কথা। কোচ সংগ্রহ প্যাকেজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে মেট্রোরেল চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সে পরিকল্পনা নিয়েই পুরোদমে কাজ চলছে। তা ছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী লাইন-৬ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করার জন্য নকশার কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। প্রকল্পের নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের।