ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় যৌতুক না পেয়ে লিজা আক্তার নামের এক গৃহবধূকে হত্যায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চান্দাইসার গ্রামে এলাকাবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কসবা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. সোলেমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক কাজল, বিনাউটি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম, সাংবাদিক শেখ ফরিদ, জেলা যুব মহিলা লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অনু পারভীন, জেলা নারী নেত্রী শিশির আক্তার, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন, ছাত্রদল নেতা রাসেল খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, নিহত লিজা আক্তার চান্দাইসার গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের গংগনগর গ্রামের বাসিন্দা রনি মিয়ার সঙ্গে লিজার বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় মাস পর ৩ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ১ নভেম্বর রাতে লিজাকে হত্যা করা হয় বলে জানায় লিজার পরিবার।
লিজার বাবা বাবুল মিয়া বলেন, ‘আমি দরিদ্র মানুষ। কোথা থেকে যৌতুকে ৩ লাখ টাকা দেব। এরা যে এত নিষ্ঠুরভাবে আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’
বাবুল মিয়া মেয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, যৌতুকের জন্য যেন আর কোনো বাবা-মায়ের বুক খালি না হয়।
এদিকে ঘটনার পর আখাউড়া থানায় মামলা না নেওয়ায় বাবুল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানকে মোবাইলে না পেয়ে কসবা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাহিদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ঘটনার পর নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আখাউড়া থানায় মামলা না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। থানা থেকে তাঁদের বলা হয়েছিল আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করতে। কিন্তু তাঁরা তা না করে হত্যা মামলা করতে চেয়েছিল। আমরা জানতে পেরেছি তাঁরা আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
পিবিআই তদন্তকারী কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘গত সোমবার আদালত থেকে মামলা তদন্ত করার নির্দেশ পেয়েছি। ইতিমধ্যে ভুক্তভোগীর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা দ্রুত এ বিষয়ে মাঠে নামব।’