ঢাকায় স্মৃতির মিনার বানানো শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে। বানানো শেষ হয়েছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে। বদরুল আলম করেছিলেন তার মূল নকশা। সমস্যা হলো, চাইলেই তো আর শহীদ মিনার বানানো যায় না। তার জন্য প্রয়োজন ইট-বালু-সিমেন্ট। সেগুলো কোথায় পাওয়া যাবে? ইট-বালু হাতের কাছেই ছিল বলে সংগ্রহ করা হলো সহজে। কিন্তু সিমেন্ট?
সিমেন্ট ছিল গুদামে। সেই গুদামের চাবি ছিল পিয়ারু সরদারের কাছে। কিন্তু তাঁকে চেনে কে? পরিচিত কারও যেতে হবে তাঁর কছে। কে চেনে পিয়ারু সরদারকে? খোঁজ খোঁজ খোঁজ। অবশেষে জানা গেল, মেডিকেল ছাত্র আলী আছগর পিয়ারু সরদারকে চেনেন, তাঁর বাড়ির ঠিকানাও জানেন। এ কথা জেনে মেডিকেল ছাত্র সংসদের ভিপি গোলাম মওলা এবং জিএস শরফুদ্দিন আহমদ খুব খুশি হলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি পিয়ারু সরদারের কাছ থেকে চাবি আনার দায়িত্ব নিলেন আলী আছগর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আহমদ রফিকসহ আরও কয়েকজন ছাত্র। হোসেনি দালান এলাকায় ছিল পিয়ারু সরদারের বাড়ি। রেলগেট পার হয়ে মেডিকেলের ছাত্ররা ছুটলেন সেই বাড়ির উদ্দেশে। দরকার কয়েক বস্তা সিমেন্ট। সবার মনে শঙ্কা, সিমেন্ট মিলবে তো?
পিয়ারু সরদার বাড়িতেই ছিলেন। আলী আছগর পিয়ারু সরদারকে সবিস্তারে বললেন সব। কোনো প্রশ্ন না করে পিয়ারু সরদার বিনা শর্তে চাবি তুলে দিলেন আলী আছগরের হাতে। বললেন, ‘যত বস্তা সিমেন্ট লাগে, খরচ করো। তোমাদের যা যা লাগে, তা নিয়ে শহীদ মিনার করো।’
সেই সিমেন্ট দিয়েই তৈরি হয়েছিল আমাদের প্রথম স্মৃতির মিনার।