দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ, সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি থাকবে এবং ধীরে ধীরে তা কমে আসবে। বিভিন্ন প্যারামিটারের ওপর ভিত্তি করে এমন তথ্য জানানো হলেও মশাবাহিত এই রোগের ভয়াবহতা এখনো কমেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ৩০৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকায় ২৪৪ জন এবং ঢাকার বাইরে রয়েছেন ৬৩ জন। তবে এ সময়ের মধ্যে নতুন কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন ১ হাজার ২৯১ জন। তাঁদের মধ্যে রাজধানীতে ১ হাজার ৯২ জন ও রাজধানীর বাইরে ভর্তি আছেন ১৯৯ জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪৬ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৫ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জন, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ৯ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৭ জন এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১৪ হাজার ৮৩১ জন। এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৪৮৩ জন। এদিকে চলতি মাসের ১৫ দিনেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন চার হাজার ৪৭৫ জন। মশাবাহিত এই রোগে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে মোট ৫৭ জনের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতে চারটি প্যারামিটার অনুযায়ী ডেঙ্গুর প্রকোপ সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছিল। কিন্তু ১৫ তারিখের পরও প্যারামিটারগুলো একই অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টিপাত এখনো হচ্ছে। পাশাপাশি আর্দ্রতা এবং এডিস মশার ঘনত্ব সবই আগের মতো রয়েছে। কাজেই ডেঙ্গুর প্রকোপ এ মুহূর্তে কমার সম্ভাবনা নেই।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই বছর প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু বিস্তৃত হয় ৬৪ জেলায়।