নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বেতগাড়ী এলাকার প্রতিবন্ধী পল্লি চিকিৎসক লাভলী খাতুন (৩১) হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাহবুবুল আলম ওরফে বিস্কুট (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, মাহবুবুলের সঙ্গে লাভলীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পাওনা টাকা ফেরত ও বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় লাভলী খাতুনকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মাহবুবুল আলম। গতকাল রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নওগাঁর পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, গত শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ঢাকার আশুলিয়া থেকে মাহবুবুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার পশ্চিম বাইতুল জামে মসজিদের পাশের একটি স্থানে মাটি খুঁড়ে লাভলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। রোববার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে আশুলিয়া থানা-পুলিশ।
আব্দুল মান্নান মিয়া আরও বলেন, লাভলী একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী। তিনি প্যারামেডিকেল থেকে পড়াশোনা শেষ করে রাণীনগর বেতাগী বাজারে ডিসপেনসারি খুলে মানুষের চিকিৎসা করতেন। লাভলীর সঙ্গে একই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মাহবুবুল আলমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মাহবুবুল একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও করেন। লাভলীর কাছ থেকে টাকাও ধার নিয়েছিলেন মাহবুবুল। বেশ কিছু দিন ধরে পাওনা টাকা ফেরত ও বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন লাভলী। কিন্তু মাহবুবুল নানা টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে লাভলীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাহবুবুল।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মাহবুবুল আলম বিয়ে করার কথা বলে লাভলীকে অপহরণ করে আশুলিয়ায় নিয়ে আসেন। রাতে জিরাবো এলাকায় পশ্চিম বাইতুল জামে মসজিদের পাশে উঁচু প্রাচীর দেওয়া একটি স্থানে নিয়ে গলাটিপে হত্যা করে লাশ সেখানে পুঁতে রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, সুরাইয়া হোসেন, রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ, ডিবির ওসি কে এম শামসুদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ বলেন, ‘লাভলী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাঁর ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’