সকালের আলো ফুটতেই দুই চাকার একটি ঠেলাগাড়িতে করে মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে বের হন। এলাকায় এলাকায় ঘুরে এসব সামগ্রী বিক্রি করে জীবিকার ব্যবস্থা হয় তাঁর।
বয়স এখন ৬৫ বছর ছুঁই ছুঁই। যেই বয়সে বিশ্রাম নেওয়ার কথা, সেই বয়সে ২০-২৫ কিলোমিটার হেঁটে ঠেলা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। ঘরে রয়েছে অসুস্থ স্ত্রী। এত পরিশ্রম করলেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি তাঁর। এই বৃদ্ধের নাম নূর ইসলাম। তাঁর বাড়ি শেরপুরের নকলা এলাকার হাসনখিলা গ্রামে। তবে হালুয়াঘাটেই বিচরণ বেশি তাঁর।
বৃদ্ধ নূর ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন এই পেশায় রয়েছেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। যুবক বয়স থেকে এই পেশায় তিনি। সংসারে এক ছেলে, সেও বিয়ে করেছে। রয়েছে আলাদা সংসার। তিনি এই বয়সে অন্য কাজ না করতে পারায় এখনো পেশাটি ধরে রেখেছেন।
নূর ইসলাম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আমাগো ভাগ্য পরিবর্তন হয় না। ছেলে যা আয় করে তাতে তার সংসার চলে না। আমারে কী দিব? কারও কাছে তো হাত তো আর পাইত্তে পারি না। তাই এইভাবে প্রতিদিন যা বেচি তা দিয়া সংসার চলে কোনোরকম। আমার থাহার একটা ঘর নাই। সরকার যদি একটা ঘর আর ভ্যান গাড়ির ব্যবস্থা কইরা দিতো, তাইলে বিরাট উপকার অয়। এই বয়সে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম।’
ওই বৃদ্ধ আরও জানান, প্রতিদিন এলাকায় ঘুরে প্রায় ৩০০-৪০০ টাকার জিনিস বিক্রি করতে পারেন তিনি। মাটির হাঁড়ি-পাতিল, পিঠার পাত্রসহ নানা সামগ্রী বিক্রি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জুলহাস মিয়া বলেন, ‘নূর ইসলাম বহুদিন ধইরা মাডির জিনিস বেঁচে। আমাগো এলাকার সবাই চেনে।’
গোরকপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আ. ওয়াহাব বলেন, ‘এই লোক নকলাসহ আমাদের পার্শ্ববর্তী নালিতাবাড়ী, হালুয়াঘাট, ফুলপুর উপজেলার কয়েক গ্রাম ঘুরে প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে মাটির জিনিস বিক্রি করে। তবে তাঁর অভাব দূর হয়নি।’