‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’ কথাটি আমরা বেশ গাম্ভীর্যপূর্ণ মনোভাব নিয়েই বলে থাকি। কিন্তু এই শিশুর পেছনে যে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষটি লুকিয়ে আছে, তাকে সব সময় ছোট বলে অবহেলা করে থাকি। তার চিন্তাভাবনার ব্যাপ্তি আমাদের কাছে কেবলই পাঠ্যপুস্তকের বাণী আর আলোচনার বিষয়।
শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুর বুদ্ধি ও চেতনার বিকাশ বলতে আমরা বাবা-মা ও সাধারণ মানুষ যা বুঝি তা হলো, শিশু যেন ভালো করে পড়ালেখা শিখতে পারে। সেই সঙ্গে অর্জন করতে পারে গাণিতিক জ্ঞান।
কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা বিষয়টির পরিধি আসলে ব্যাপক। বেড়ে ওঠার সঙ্গে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল চিন্তাভাবনা, পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা এর সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া সবকিছু আত্মস্থ করার পরিবর্তনশীল ও সাম্প্রতিক কৌশল শেখার মাধ্যমেও ঘটতে থাকে ছোট্ট শিশুর চেতনা ও বুদ্ধির বিকাশ। তৈরি হতে থাকে নিজস্ব আত্মবিশ্বাস এবং আত্মমর্যাদাবোধ। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর চিন্তাভাবনা ও বুদ্ধির বিকাশ হয়ে থাকে।
যেমন:
মায়ের গর্ভ থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর যে বিকাশ ঘটে, তা প্রারম্ভিক বিকাশ। এই স্তরে মস্তিষ্কের ৯০ শতাংশ গঠন সম্পূর্ণ হয়। এরপর শৈশব থেকে কৈশোর, বয়ঃসন্ধিকাল পার করে শিশু হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ মানুষ। এ সময় একটি শিশু সবকিছু খুব আগ্রহ নিয়ে দেখে, জানতে চেষ্টা করে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনুসন্ধান করতে পছন্দ করে এবং তার পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করে। এভাবেই চলতে থাকে পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে তার ছোট্ট মস্তিষ্কের গবেষণা।
বর্তমান যান্ত্রিক জীবনের কঠিন ছকে আমরা শিশুদের এই অন্বেষণ করার মানসিকতা বুঝতে পারি না বা চাই না। আবার চাইলেও সময় করে উঠতে পারি না। বরং অভিযোগের ঝুড়ি নিয়ে বসি, যা তাদের ভবিষ্যৎ বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তাই শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুর বুদ্ধির বিকাশের দিকেও নজর দিতে হবে।
যা করবেন
লেখক: ডা. নূরজাহান বেগম, স্পেশালিস্ট, পেডিয়াট্রিক আইসিইউ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা