ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। এই সড়কে থাকা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের খুঁটি সরিয়ে না নেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বারবার চিঠি দিলেও কাজ করতে গড়িমসি করার অভিযোগ তুলেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব খুঁটি সরিয়ে নেওয়া না হলে চলাচলরত যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন সভায় উঠে আসে এই সমস্যার কথা।
সওজ জানায়, পুরো লিংক রোডে বিদ্যুৎ সংযোগ সরিয়ে নেওয়ার কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে। এ ছাড়া শিবু মার্কেট এলাকায় গ্যাসের সংযোগ সরিয়ে নিতেও বলা হয়েছে তিতাসকে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের কারণে ধীরগতিতে চলছে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুরো লিংক রোডে মোট ৬৫০টি বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০টি খুঁটি অপসারণ করা হয়েছে। বাকি ৩৫০টি খুঁটি এখনো অপসারণের অপেক্ষায় রয়েছে। গত মে মাসের হিসেব অনুযায়ী, এই সড়ক থেকে মোট ২৭৭টি খুঁটি অপসারণ করা হয়েছে। চলতি জুলাই মাসে সেই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এসব খুঁটির কারণে সড়ক নির্মাণকাজ নির্বিঘ্নে করতে পারছে না সওজ। নির্মাণসামগ্রী নিয়ে আসা যানবাহন চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। খুঁটি ভেঙে গেলে বা বৈদ্যুতিক তাঁর ছিঁড়ে গেলে ভোগান্তির শিকার হবেন বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীরা। ফলে গ্রাহকদের দিকে তাকিয়ে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে কাজ চালাচ্ছে সওজ।
সরেজমিনে লিংক রোডের শিবু মার্কেট থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত সড়ক ঘুরে দেখা যায়, শিবু মার্কেট মোড়ে চলছে ওভারপাস নির্মাণের কাজ। এই ওভারপাস নির্মাণাধীন এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু গ্যাস সংযোগের পাইপ। এসব পাইপ নিরাপদে সরিয়ে নিতে তিতাসকে অনুরোধ করেছে সওজ। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে চিঠি। অন্যদিকে সড়কের সস্তাপুর অংশ থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত সড়কে রয়ে গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। সেই খুঁটি রেখেই সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চালাচ্ছে সওজ। ডিপিডিসি কবে নাগাদ সরিয়ে নেবে সেই অপেক্ষায় না থেকে বাধা বিপত্তি নিয়েই যথাসম্ভব কাজ এগিয়ে নিয়েছে সওজ।
কথা হলে এক নির্মাণশ্রমিক বলেন, ‘খুঁটির কারণে খননযন্ত্র আর রোলার গাড়ি চালাতে একটু অসুবিধা হয়। ধাক্কা লেগে খুঁটি ভেঙে পড়লে তো বিপদ সবার জন্য। খুঁটির দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হচ্ছে। এমনও হয়েছে কাজ শেষ, তারপর ডিপিডিসি এসে খুঁটি সরিয়েছে। এই কাজটা আগে করলে সড়ক নির্মাণকাজ করতে সহজ হতো।’
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত চিঠি দিচ্ছি তাড়াতাড়ি বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য। এক বছর আগে টাকা দিয়ে রেখেছি তাদের। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ নানা কথা বলে বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছে। তাদের বলা হলেই বলে, এইতো দ্রুত সরিয়ে ফেলব। আমরা তারপরও এটি নিয়ে কথা বলেছি, চিঠি দিয়েছি। আশা করছি তারা দ্রুত এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে।’