হোম > ছাপা সংস্করণ

থেরাপিতে ভালো হন স্ট্রোকে আক্রান্তরা

অরূপ রায়, সাভার থেকে

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পাঁচতারা গ্রামের পারুল বেগম স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বাক্‌শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। বাম পাশ অবশ হয়ে যাওয়ায় বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না তিনি। সেই পারুল বেগম এখন অনেকটাই সুস্থ। সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসা নিয়ে তিনি এখন লাঠির সাহায্যে হাঁটতে পারেন।

সিআরপির তথ্য অনুযায়ী স্ট্রোকে আক্রান্ত ২০-২৫ হাজার রোগী প্রতিবছর সিআরপিতে চিকিৎসার জন্য আসেন। যাঁদের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।

সিআরপির বহির্বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারজানা শারমিন বলেন, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, ধূমপান, তৈলাক্ত খাবার খাওয়া, উচ্চরক্তচাপের রোগীদের অনিয়মিত ওষুধ সেবন, অতিরিক্ত ওজন ও কায়িক পরিশ্রম না করা স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। স্ট্রোকে আক্রান্ত ১০৯ জন রোগীর ওপর গবেষণা করে তিনি এসব তথ্য পেয়েছেন বলে জানান।

পারুল বেগমের মেয়ে সোনিয়া আক্তার বলেন, তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে ভুগছিলেন। গত ১২ মে ভোরে তাঁর কথা আটকে যাচ্ছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যে তাঁর মুখ বাঁকা হয়ে যায়। এর তিন দিনের মধ্যে তাঁর বামপাশ অবশ হয়ে যায়। এ অবস্থায় তাঁর মাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পেরে গত ৫ আগস্ট মাকে সিআরপিতে নিয়ে আসেন।

পারুলের চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্ট জ্যোতি পাল বলেন, অনিয়মিত ওষুধ সেবনের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে পারুল বেগমের স্ট্রোক হয়। তাঁকে যখন সিআরপিতে আনা হয়, তখন তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না। হুইলচেয়ার ছাড়া চলাচল করতে পারতেন না। প্রায় তিন মাসের চিকিৎসায় তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়াই এখন বিছানা থেকে উঠতে পারছেন। অন্যের সাহায্য নিয়ে হাঁটতে পারছেন।

জুয়েলারির ব্যবসা করতেন মাগুরার মহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী জয়দেব আদিত্য। গত এপ্রিল মাসে দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তিনি মেঝেতে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ওইদিনই তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের কাছ থেকে তাঁর স্বজনেরা জানতে পারেন তিনি স্ট্রোক করেছেন। ওই হাসপাতালে এক সপ্তাহের চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।

জয়দেবের আত্মীয় গোপীনাথ কর্মকার বলেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাঁর ফুপা চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাঁর ডানপাশ অবশ হয়ে যায়। এ অবস্থায় মাসদেড়েক আগে চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিআরপিতে আনা হয়। দেড় মাসের চিকিৎসায় তিনি দাঁড়াতে পারছেন। অন্যের সাহায্য ছাড়াই হুইলচেয়ারে বসতে এবং হুইলচেয়ার থেকে বিছানায় যেতে পারছেন।

সিআরপির নিউরোলজি বিভাগের দায়িত্বে থাকা জুনিয়র কনসালট্যান্ট হারুন-অর-রশীদ বলেন, ফিজিওথেরাপি স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার অন্যতম চিকিৎসা। স্ট্রোক হওয়ার পরপরই রোগীদের এই চিকিৎসার আওতায় আনা হলে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব।

হারুন-অর-রশীদ বলেন, গ্রামের লোকজন এখনো কবিরাজ বিশ্বাস করেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কেউ চলৎশক্তি হারিয়ে ফেললে তাঁকে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করানো হয়। এতে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই অবস্থায় কোনো রোগীকে সিআরপিতে আনা হলেও ফিজিওথেরাপি দিয়ে তাঁকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয় না।

সিআরপির ফিজিওথেরাপি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, সাভারসহ সিআরপির ৯টি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৮০ হাজার রোগীকে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনসেবা দেওয়া হচ্ছে। এঁদের মধ্যে ২০-২৫ হাজার রোগী স্ট্রোকে আক্রান্ত।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ