গাইবান্ধায় এলাম আর রসমঞ্জরি না খেয়ে ফিরে গেলাম, তা কি হয়! যেকোনো অনুষ্ঠান, যেকোনো পর্ব, আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়া, বিয়ের জন্য মেয়ে বা ছেলে দেখতে যাওয়া, বিয়ের আশীর্বাদ বা আংটি পরাতে যাওয়া—সব কাজেই সঙ্গে থাকতে হবে রসমঞ্জরির প্যাকেট! এ ছাড়া প্রতিদিনের স্বাদ মেটানো তো আছেই। এ যে গাইবান্ধাবাসীর স্বাদ মেটানোর জাদুর রস!
লালচে ঘন জমে থাকা দুধের মধ্য থেকে উঁকি দেওয়া ছোট ছোট গোল গোল নরম ছানার বল, মুখে দিলেই ক্ষীর আর রসের মিশেলে জিভেয় ছড়িয়ে পড়ে অদ্ভুত স্বাদ। এ হলো রসমঞ্জরি। গাইবান্ধার রসমঞ্জরি। লোভনীয় স্বাদের মোহনীয় রসে টইটম্বুর এক মিষ্টি। লালচে ঘন দুধের মাঝে ডুবে থাকা ছোট গোল গোল নরম মিষ্টিগুলো বাটি ধরে নাড়া দিলে জমে থাকা ক্ষীর থেকে উঁকি দেয় যেন জিভে জল আনতে!
জানা যায়, এই রসমঞ্জরি প্রথম তৈরি হয়েছিল ১৯৪৮ সালের জুন মাসে, গাইবান্ধার রমেশ ঘোষের হাত ধরে। সার্কুলার রোডের রমেশ সুইটসের কর্ণধার প্রয়াত রমেশ ঘোষ প্রথম উড়িষ্যার (ওড়িশা) এক কারিগরকে এনে শুরু করেন রসমঞ্জরি বানানো। শুরুতে রসমঞ্জরিগুলো লম্বা আকারের বানানো হতো বলে জানা যায়। তবে সময়ের সঙ্গে আর রুচির পরিবর্তনে বদলেছে তার আকার। এখন এটি গোল করেই বানানো হয়।
রসমঞ্জরির বড় অংশজুড়ে থাকে দুধ ও ছানা। প্রাথমিকভাবে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে বানানো হয় ক্ষীর। এরপর ছানা আর সামান্য ময়দা বা সুজি দিয়ে তৈরি করা হয় নরম ছোট ছোট বল। এরপর সেগুলো চিনির শিরায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট সেদ্ধ করে খানিক ঠান্ডা করে মেশানো হয় ক্ষীরে। এভাবেই তৈরি হয় রসনার তৃপ্তি মেটানো রসমঞ্জরি।
কারিগরেরা জানান, প্রতি কেজি রসমঞ্জরী তৈরি করতে প্রয়োজন হয় আড়াই লিটার দুধ, দুধের ছানা ২০০ গ্রাম, ১০০ গ্রাম চিনি, ২৫ গ্রাম ময়দা ও এলাচি। ১ কেজি রসমঞ্জরী তৈরিতে প্রায় ২৫০ টাকা খরচ হয়। আর বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা।
এই রসমঞ্জরি প্রথম তৈরি হয়েছিল ১৯৪৮ সালের জুন মাসে, গাইবান্ধার রমেশ ঘোষের হাত ধরে। সার্কুলার রোডের রমেশ সুইটসের কর্ণধার প্রয়াত রমেশ ঘোষ প্রথম উড়িষ্যার (ওডিশা) এক কারিগরকে এনে শুরু করেন রসমঞ্জরি বানানো।
আগে বলগুলো হাতে তৈরি করা হতো। এখন অটোমেটিক মেশিনে হাতের স্পর্শ ছাড়াই তৈরি করা হয়। তবে তাপমাত্রা সহনীয় থাকলে রসমঞ্জরি ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত খাওয়ার উপযোগী থাকে।