হোম > ছাপা সংস্করণ

ধান নিয়ে বেকায়দায় কৃষকেরা

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধান বিক্রি করতে না পেরে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শহরের ভোগাই সেতুর কাছে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে তাঁরা। পরে পুলিশ এসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে কৃষকেরা রাস্তা ছেড়ে দেন।

জানা গেছে, কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত ধান বাজারে বিক্রি করতে প্রতি দুই মণে চার থেকে পাঁচ কেজি বেশি দিতে হয় আড়তদারদের। যাকে বলা হয় ‘ঢলতা’। এই ‘ঢলতা’ তোলা বন্ধ করতে গত মঙ্গলবার রাতে আড়তদারদের নিয়ে সভা করে উপজেলা প্রশাসন। সভায় প্রতি দুই মণে দুই কেজি ধান ‘বস্তার ওজন’ হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও গতকাল বুধবার ধান কেনাবেচা বন্ধ রাখে শহরের দুটি আড়তদার।

পরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকেরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে দুপুর ১২টায় তাঁরা শহরের ভোগাই সেতুর কাছে অবস্থান করে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় কৃষকেরা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতি দুই মণে দুই কেজি ধান বেশি হিসেবে ধান বিক্রির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পরে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহম্মেদ বাদলের আশ্বাসে কৃষকেরা তাঁদের অবস্থান থেকে সরে যান।

পরে বেলা দেড়টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোকছেদুর রহমান লেবু ও ওসি বছির আহম্মেদ বাদল আড়তদারদের নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসেন। এ সময় আড়তদারেরা প্রতি দুই মণে তিন কেজি ধান ‘ঢলতা’ হিসেবে দাবি করেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুরোধে মঙ্গলবার রাতের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি দুই মণে দুই কেজি ধান বেশি হিসেবে ধান কিনতে কিছু আড়তদার রাজী হলেও অনেকে অস্বীকৃতি জানান।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, চলতি বোরো মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকেরা একরে ৩৫ থেকে ৪৫ মণ ধান পেয়েছেন। এ ছাড়া একরে এক মণ ধান কাটতে কৃষিশ্রমিককে দিতে হয়েছে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। মঙ্গলবার সকাল থেকে শতাধিক কৃষক শহরের নালিতাবাড়ী বাজার ও তারাগঞ্জ উত্তর বাজারে ধানের আড়তে ধান বিক্রি করতে আসেন। এ সময় আড়তদাররা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি দুই মণে দুই কেজি ধান বেশি হিসেবে ধান কিনতে অস্বীকৃতি জানান।

এর আগে কৃষকেরা ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। পরে গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ইউএনও নালিতাবাড়ী বাজারে ধানের আড়তে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অতিরিক্ত ধান নেওয়ার অভিযোগে ধান-চাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো . রুবেল আহমেদের আড়তকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে সেদিন প্রায় তিন ঘণ্টা ধান কেনা-বেচা বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা।

ধান-চাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল আহমেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতি দুই মণে বস্তার ওজন হিসেবে দুই কেজি ধান বেশি নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। আমরা ব্যবসায়ীরা বলেছিলাম, মহাজনদের সঙ্গে কথা বলে যদি এই ওজনে ধান বিক্রি করতে পারি তবেই আমরা সভার সিদ্ধান্তে ধান কিনবো। কিন্তু মহাজনেরা এই ওজনে ধান কিনবেন না বলে জানিয়েছেন। তাই আমরা ধান কেনা বন্ধ রেখেছি।’

খাদ্য-শস্য মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল আহসান বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুরোধে মঙ্গলবার দুপুরে আমরা ধান কেনা শুরু করেছি। তবে প্রতি মণে তিন কেজি ধান বেশি না পেলে আমাদের ব্যবসায় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, ‘আড়তদারেরা সভার সিদ্ধান্ত মানেননি। ধান ওজনে বেশি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কৃষকদের স্বার্থে ধান বিক্রির জন্য প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু বলেন, ‘আড়তদারেরা সভায় সিদ্ধান্ত নিলেও এখন তা মানছেন না। আমি তাঁদের অনুরোধ করেছি প্রতি দুই মণে দুই কেজি ধান বেশি হিসেবে ধান কেনার জন্য। তাঁরা এখন প্রতি দুই মণে তিন কেজি ধান দাবি করছেন। তবে মঙ্গলবার রাতের সভায় তাঁরা এ ধরনের কথা বলেননি।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ