বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বেশ কিছু দামি মোটরসাইকেল পড়ে আছে সাতক্ষীরা থানা প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে। শুধু মোটরসাইকেল নয়, পাশেই রয়েছে জরাজীর্ণ মাইক্রো, প্রাইভেট কার, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের স্তূপ। নিত্যদিনের রোদ, বৃষ্টি, ঝড় আর ধুলায় এসব গাড়ির যন্ত্রাংশে মরিচা ধরে গেছে। একই স্থানে দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন, অবহেলায় পড়ে থাকায় অধিকাংশ যানবাহন অকেজো হয়ে গেছে।
এ যানবাহনগুলোর অধিকাংশই বিভিন্ন অপরাধে জব্দ করা মামলার আলামত। এ ছাড়া চোরাইকৃত যানবাহন ও কাগজপত্রবিহীন যানবাহনও রয়েছে। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে এগুলো। আইনি জটিলতার কারণে অনেক মালিকই ছাড়িয়ে নিতে পারেন না এসব যানবাহন। অন্যদিকে আইনি জটিলতার কারণে নিলাম না হওয়ায় কমছে এর বাজার (নিলাম) দর। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সরেজমিনে থানায় দেখা যায়, থানা প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে জব্দ করা এসব যানবাহন। সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আলামত (যানবাহন) খোলা স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। থানার কর্মকর্তাদের দাবি, জব্দ করা যানবাহন রাখার জন্য আলাদা স্থানে নির্দিষ্ট গ্যারেজ করে দেওয়ার। এতে সুরক্ষিত থাকবে বাহন। সরকারের কোষাগারেও জমা হবে পর্যাপ্ত রাজস্ব।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা থানায় জব্দকরা এসব যানবাহনগুলো একই স্থানে পড়ে আছে বছরের পর বছর। ৮-১০ বছর আগে আটক করা গাড়িও আছে সেখানে। যার অধিকাংশই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেক গাড়ি রয়েছে যেগুলোর ভেতরে, বাইরে ধুলা, ময়লা জমে যন্ত্রাংশ ক্ষয়ে খসে পড়ছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, জব্দ করা মোটরসাইকেলের সংখ্যা শতাধিক। এ ছাড়া ৫টি ট্রাক, ১০টি প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহন খোলা আকাশে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হুসেন বলেন, বিভিন্ন অপরাধে এসব যানবাহন জব্দ করা হয়েছে। কাগজপত্র না থাকায় সঠিক মালিকের কাছেও হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন বলে তিনিও মনে করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘দৈনিক অথবা মাসে যে পরিমাণ গাড়ি আমাদের এখানে জমা হচ্ছে, সে অনুসারে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আইনি জটিলতার ফলে জব্দ হওয়া বাহনের সংখ্যা বাড়ছে। অল্প জায়গায় অধিক যানবাহন রাখার কারণে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রাংশ। জায়গা না থাকায় এগুলোকে খোলা আকাশের নিচে রাখতে হয়।’
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি আ্যড. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ অযত্ন, অবহেলায় পড়ে থাকার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দ্রুত এসব মামলা নিষ্পত্তি করলেই আমাদের সম্পদগুলো রক্ষা পাবে। সরকারও রাজস্ব পাবে। তবে গাড়িগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করাটাও জরুরি।’