দখল হয়ে গেছে পোস্তগোলা সরকারি আধুনিক ময়দা মিলের কিছু জায়গা। দখলদারেরা মিলের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকের প্রায় ২০ কাঠা জমি দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজধানীর পোস্তগোলায় ১৯৫২ সালে ময়দা মিলটি স্থাপন করা হয়েছিল। শুরুতে মিলটি ভালোভাবে চললেও ২০০০ সালে সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ২০০১ সালে মিলটি আধুনিকায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়। মিলটি নতুন করে গড়ে তুলতে ১৩৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয় সরকার। ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর মিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
প্রায় এক যুগ আগে প্রভাবশালী মহল মিলের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকের প্রায় ২০ কাঠা জমি দখল করে লোহা ও ইস্পাতের দোকান গড়ে তোলেন। তৎকালীন ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে দখলদারেরা এ জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মিলের প্রধান গেটও ব্যবহার করছেন অবৈধ দখলদারেরা। এসব অবৈধ প্রভাবশালী মহলের বাধায় নির্দিষ্ট জায়গা ছেড়ে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণে বাধ্য হয় মিল কর্তৃপক্ষ। এমনকি পূর্ব-পশ্চিম পাশে ম্যাপ অনুযায়ী সীমানা-মৌজা হওয়ার কথা থাকলেও তা বাঁকা করে পশ্চিমে পুকুরের পানিতে পিলার করতে বাধ্য হয়েছে। দখলদারেরা সীমানা ঘেঁষে ভারী লোহা রাখায় মিলের পূর্ব-দক্ষিণের দেয়ালটিও হেলে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে মিল কর্তৃপক্ষ এসব দোকান সীমানাপ্রাচীর থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্বে সরিয়ে নিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ (ডিএসসিসি) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, মিলের সামনের অংশের দেয়াল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কয়েকটি লোহার দোকান। ফলে দেয়ালটির কিছু অংশ ভেঙে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশন থেকে জায়গার লিজ এনেছি। কিন্তু তারা কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি।’
এ ব্যাপারে পোস্তগোলা লৌহ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আজাহার বলেন, দোকানদারেরা সিটি করপোরেশন থেকে জমি লিজ নিয়েছেন। যদি সিটি করপোরেশন তাদের সরে যেতে বলে, তাহলে তাঁরা চলে যেতে বাধ্য। আর পুকুরপাড়ের প্রাচীরটি ঠিকভাবে নির্মাণ না করায় ভেঙে যাচ্ছে।
মিলের চিফ মিলার সাজেদুর রহমান বলেন, ‘মিলের সামনের রাস্তা ও দোকানের জায়গা আমাদের (মিলের)। কিন্তু অসাধু দোকানদারেরা বলছেন, তাঁরা তৎকালীন সিটি করপোরেশন থেকে লিজ নিয়েছেন। কীভাবে লিজ নিয়েছেন জানি না। এখন তাঁরা বলছেন, এটা ডিএসসিসির জায়গা। এটা সম্পূর্ণ ভুয়া।’
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বলেন, মিলের জায়গা দখল কিংবা লিজ দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর জানা নেই। এটা ম্যাপ দেখে বলতে হবে।