সুন্দরবনসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে পূর্ণিমা তিথিতে শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী রাসপূর্ণিমার পূজা ও পুণ্যস্নান। তিথি অনুযায়ী ৬ থেকে ৮ নভেম্বর দুবলার চরের আলোর কোলে তিন দিনব্যাপী এই উৎসব হবে।
তবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে এবারও পুণ্যার্থী ছাড়া অন্যদের এ সময় সুন্দরবনে ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব ঘিরে সুন্দরবনের উপকূলজুড়ে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। তীর্থযাত্রীর ছদ্মবেশে হরিণ শিকার বন্ধে বন বিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এবারও বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাসপূর্ণিমায় তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের নিরাপদে যাতায়াতের জন্য বন বিভাগ পাঁচটি নৌপথ নির্ধারণ করেছে। নির্ধারিত পাঁচটি পথ হলো মোংলা বন্দরের পশুর নদ হয়ে দুবলার চর; শরণখোলার বগি-বলেশ্বর-কচিখালী হয়ে দুবলার চর; বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলা নদী-পাটকোস্টা হয়ে দুবলার চর; কয়রা ও আড়ুয়া হয়ে দুবলার চর এবং নলিয়ান স্টেশন থেকে মরজান ও শিবসা নদী হয়ে দুবলার চর।
সুন্দরবনের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এ বছরও তীর্থযাত্রীদের সুন্দরবন থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হবে না। নিজেদের জ্বালানি সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হবে। কোনো রকম মাংস বহনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তীর্থযাত্রীরা কোনো রকম বনজ সম্পদ যাতে বিনষ্ট না করেন সে জন্যও নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। মেলাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে বন থেকে হরিণ শিকার করতে না পারে, সে জন্য এবারও কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হরিণ শিকার রোধে সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বন বিভাগের বিশেষ দল কাজ শুরু করেছে।
এ ছাড়া বন বিভাগের স্মার্ট প্যাট্রল টিমও সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। দুবলার চরে মেলার তিন দিন বন বিভাগের আরও তিনটি টহল দল সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
রাস উৎসব বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবারও খুবই স্বল্প পরিসরে রাস উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি, এ বছর সবার সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠুভাবে এই উৎসব সম্পন্ন করব।’