বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের আলোর কোলে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের রাস উৎসব। তিন দিনব্যাপী এ উৎসব গত বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হয়। তবে, এবার রাস পূর্ণিমার পুণ্যস্নান ও রাসপূজার অনুমতি দেওয়া হলেও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে রাসমেলা করার অনুমতি দেয়নি বন বিভাগ।
তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থী সূত্রে জানা যায়, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে দুবলার চরের আলোর কোলে গত তিন দিন থেকেই জড়ো হতে শুরু করে শত শত তীর্থযাত্রী। তাদের পদচারণায় সুন্দরবনের আলোর কোল, মেহের আলীর চর ও দুবলারচর মুখরিত হয়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস পূর্ণিমায় ঐতিহাসিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শুক্রবার ভোরে সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচনের আশায় পুণ্যস্নানে অংশ নেন।
জানা যায়, প্রতিবছর নভেম্বর মাসে রাস পূর্ণিমার তিথিতে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল ও চট্টগ্রামসহ দেশে-বিদেশের নানা প্রান্তের ১০ থেকে ২০ হাজার সনাতন পুণ্যার্থীসহ নানা ধর্মবর্ণের দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা রাস উৎসবে অংশ নিয়ে থাকেন। তবে পুণ্যস্নান-রাসপূজা উপলক্ষে আয়োজিত হয়ে আসা মেলা এবার বন্ধ করে দেওয়ায় লোক সমাগম অর্ধেকে নেমে এসেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের হিসেবে এ বছর ১৩৭তম রাস উৎসব হলেও ঐতিহাসিকদের মতে, ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দের আগেই সুন্দরবনে রাস উৎসব হয়ে আসছে। প্রতিবছর বাংলা কার্তিক মাসের শেষে বা অগ্রহায়ণের প্রথম দিকের রাস পূর্ণিমার তিথিতে এই রাস উৎসব উদ্যাপিত হয়। কালের বিবর্তনে জেলে ও বনজীবীসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এখন এই উৎসবে যোগ দিয়ে থাকেন।