হেমায়েত ওরফে জাহিদ কবিরাজ। জিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলে প্রচার করতেন। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে নানা সমস্যা সমাধানের নামে প্রতারণা করে আসছিলেন।
রাজধানীর মিরপুরে পাঁচ বছর ধরে নিজের আস্তানায় এমন প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় জনরোষের মুখে এলাকা ছাড়েন। এরপর আস্তানা গাড়েন মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে র্যাব। গত বুধবার আটক করা হয় জাহিদকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে, জাহিদ বাগেরহাটে এক নারী উদ্যোক্তা হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মবেশ ধারণ করতেন তিনি।
র্যাব বলছে, ২০০৫ সালে বাগেরহাটের মনোয়ারা বেগম মনু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হেমায়েত। ১৭ বছর ধরে তিনি দেশে ও ভারতে কবিরাজের ছদ্মবেশে ছিলেন। তাঁর বাড়ি পিরোজপুর নাজিরপুর উপজেলায়।
র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তারের পর জাহিদের আস্তানা থেকে কথিত কবিরাজি চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১২৯টি আংটি, ৩টি শঙ্খ, কথিত আলাদিনের চেরাগ, ২টি ক্রেস্ট, কবিরাজি-সংক্রান্ত ১৫টি বই, পিতলের ১টি পাঞ্জা এবং অন্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মনু হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ২০০৫ সালের অক্টোবরে বাগেরহাট সদরের নারী উদ্যোক্তা মনোয়ারা বেগম মনুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জাহিদসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার রায়ে ২০০৯ সালের জুনে জাহিদ কবিরাজকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি ২০০৫ সালে মনু হত্যার পর থেকেই পলাতক ছিলেন।
জাহিদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানান, তিনি ১৫-১৬ বছর বয়সে কবিরাজি পেশা শুরু করেন। তিনি ২০০৩ সালে স্ত্রী-সন্তানসহ পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটে চলে আসেন। সেখানে কবিরাজি পেশায় তাঁর অন্যতম সহযোগী ছিলেন মনু হত্যা মামলার আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সোবহান।