গাইবান্ধার পলাশবাড়ী কারিগরি কলেজ মাঠের জায়গা বন্ধক বা মর্টগেজ রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের এক দাতা সদস্যের বিরুদ্ধে। দেড় বিঘারও বেশি জমি দুই লাখ টাকায় লিজ নিয়ে ধান চাষ করছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।
তবে অভিযুক্ত দাতা সদস্য জাকারিয়া মণ্ডল সোহেল বলেন, ‘জমি বন্ধক রাখার কোনো নথি নেই, আমরা কলেজের জন্য জমি দিয়েছি এক একর। এর মধ্যে দেড় বিঘা জমির ওপরে কলেজ রয়েছে। বাকি জমি এখনো আমাদের দখলে রয়েছে। এ জমিটুকু কলেজকে এখনো হস্তান্তর করা হয়নি বিধায় আমরা চাষ করছি। কলেজের প্রয়োজন হলে জমি হস্তান্তর করা হবে।’
লিজ গ্রহণকারী চাষি আব্দুল বাকি মিয়া জানান ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাসিন্দা মতলুবের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দিয়ে জমিটি লিজ নিয়ে সাড়ে তিন বছর হলো ধান চাষ করছি। মতলুবর প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য সোহেল মিয়ার কাছ থেকে নেওয়ার পর আমরা বন্ধক নিই।’
জানা যায়, পলাশবাড়ী পৌরসভার আন্দুয়া গ্রামে এক একর জমিতে ১৯৯৯ সালে স্থাপন করা হয় পলাশবাড়ী কারিগরি কলেজ। পরে ২০০১ সালে হয় কলেজটি এমপিওভুক্ত। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা দুই শতাধিক। বেতনভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে ১৩ জন। কলেজের মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত দেড় বিঘার বেশি জমি কয়েক বছর হলো লিজ দেওয়ায় সেখানে চলছে ধান চাষ।
কলেজের অধ্যক্ষ শামীমা সুলতানা জানান, দেড় বিঘা জমির ওপর কলেজের অবকাঠামো থাকলেও পুরো এক একর জমি কলেজের দখলেই রয়েছে। কলেজের মাঠের জমি একটু নিচু হওয়ায় ধান চাষ করা হচ্ছে। ওই জায়গায় মাটি ভরাট করা প্রয়োজন। জমিটি বর্গা, লিজ বা বন্ধক রাখার কোনো রেজুলেশন কলেজের নেই। এ ছাড়া জমি বন্ধক রাখার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাতাব হোসেন বলেন, ‘করোনাকালীন কলেজটি নিয়মিত খোলা না থাকা ও ক্লাস না হওয়ায় বিষয়টি একাধিকবার কলেজের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’ কলেজের মাঠের জমি বন্ধক বা লিজ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
পলাশবাড়ী কারিগরি কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান নয়ন আজকের পত্রিকাকে জানান, কলেজের মাঠের জমি বন্ধক বা লিজ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর কলেজমাঠে সব ধরনের চাষাবাদ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। সেই সঙ্গে কলেজমাঠে মাটি ভরাট করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।