অল্প বৃষ্টিতেই ময়মনসিংহ নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গতকাল সোমবার সকালে বৃষ্টিতে নগরীর ডিবি রোড, কৃষ্টপুর, সাবেহ আলী রোড, নাটক ঘরলেন, সানকিপাড়া, গুলকীবাড়ি রোড, চরপাড়া ও নয়াপাড়ার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
জেলা জনউদ্যোগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‘আমরা সবাই জানি সিটি করপোরেশনের ড্রেন সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। তবে কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে এবং জলাবদ্ধতা দূর হবে, তা বলা মুশকিল। আসলে সিটি করপোরেশন যেভাবে ড্রেন সংস্কারের কাজ করছে, তাতে মনে হচ্ছে না যে জলাবদ্ধতা দূর হবে। কাজের মান দেখে মনে হয়, পানি জমিয়ে রাখার জন্য তারা তা করছে। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ড্রেন খনন না হলে মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কোনোভাবেই দূর হবে না।’
তবে মসিক কর্তৃপক্ষ জানায়, চলমান উন্নয়নকাজ শেষ হলেই নগরবাসীর ভোগান্তি দূর হবে।নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, পুরোহিতপাড়ার বাই লেনের রাস্তাটি ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝখান দিয়ে গেছে। এই এলাকায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার লোকের বসবাস। বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়িতে পানি উঠে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
ডিবি রোড এলাকার বাসিন্দা মাহমুদা বেগম বলেন, ‘আজকের বৃষ্টিতে রাস্তায় পানির জন্য বাসা থেকে বের হওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। রিকশা ও অটোরিকশা কিছু না পেয়ে কাদাপানি ভেঙে হেঁটে আসতে হয়েছে। মূলত ড্রেনগুলো ভালোভাবে সংস্কার না হওয়ায় বারবার মানুষকে এমন ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।’
সব্যসাচী নামে একজন চিকিৎসক বলেন, ‘আমরা কেমন নগরীতে বসবাস করছি, তা ভেবে পাই না। নিয়মিত ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু সুবিধা কোথায়। ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে দেখছি ছায়াবাণী হলের সামনে জলাবদ্ধতা, তা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। কোনো প্রতিকার নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই কোমরপানি উঠে যায় রাস্তায়। পানির দুর্গন্ধেও বাসা থেকে বের হতে মন চায় না।’
অটোরিকশাচালক হোসেন আলী বলেন, ‘এলাকার ড্রেনগুলো প্রতিবছরই পর্যায়ক্রমে ছোট হচ্ছে। ময়লায় ভরে যাচ্ছে। কোনো তদারকি না থাকায় পানি নিষ্কাশিত না হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।’
১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল খান বলেন, ‘অতিবৃষ্টিতে আমার ওয়ার্ডসহ শহরের প্রায় জায়গাতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই জলাবদ্ধতার পানি খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। আমরা নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার করছি। তবে সাধারণ মানুষের যে অভিযোগ, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেয়র বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। সেগুলো বাস্তবায়িত হলে সাধারণ মানুষ পুরো সুফল পাবে।’
প্যানেল মেয়র-৩ সামীমা আক্তার বলেন, বেশি বৃষ্টি হলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হচ্ছে শেওড়া, মাগরজানি এবং গোয়ালকান্দি খাল ভরাট ও বেদখল হয়ে যাওয়া। এই সমস্যা দূরীকরণে চার বছর মেয়াদি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। চলমান ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হলেও নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে কিছুটা স্বস্তি পাবে।