কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম পাহাড়পুর। ইউনিয়নের বাঁধবাজার থেকে পাশের সদর উপজেলার কমলাপুর কাঁচা-পাকা সড়কের এক কিলোমিটার অংশে ও মরা কালীগঙ্গা নদীর পাড় ঘেঁষে গ্রামটির অবস্থান। আগে এই গ্রামের নাম ছিল কাশোডাঙা। তবে আশপাশের এলাকার তুলনায় উঁচু স্থানে অবস্থান হওয়ায় পরে নামকরণ করা হয় পাহাড়পুর। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হানাহানিতে এই গ্রাম এখন ধ্বংসের কিনারে। তিন বছরে এখানে খুন হয়েছেন চারজন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার একজন খুন হয়েছেন। সংঘাত, সহিংসতায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। তবে এ নিয়ে প্রশাসন কিংবা রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনো মাথাব্যথা নেই।
স্থানীয় সূত্র বলেছে, শেখ, মণ্ডল ও ব্যাপারি নামে তিন সমাজে বিভক্ত পাহাড়পুরের মানুষ। আধিপত্য বিস্তারে এখন শেখ ও মণ্ডল মিলে এক সমাজ হয়েছে। তাঁদের প্রতিপক্ষ ব্যাপারি সমাজ। শেখ ও মণ্ডল সমাজের নেতৃত্বে ছিলেন আমিরুল ইসলাম ও ভুট্টো নামের দুজন। গত মঙ্গলবার প্রতিপক্ষের হামলায় আমিরুল নিহত হয়েছেন। আর ব্যাপারি সমাজের নেতৃত্ব দেন সাদ ব্যাপারি ও ফিরোজ আহমেদ ওরফে কটা মেম্বর। মামলার আসামি হয়ে ফিরোজ এখন পলাতক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারে ২০১৭ সালে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ব্যাপারি গ্রুপের আরিফের মেয়ে রুমি খুন হয়। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় প্রায় অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি হয় মামলাটি। ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে নেহেদ আলী ও বকুল আলী নামের দুই সহোদরকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সকালে নেহাদ ও বকুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও নয়ন মণ্ডলের ছেলে খোকন মণ্ডলের ওপর হামলা চালায় বাদীপক্ষ। আমিরুল ইসলামকে গত মঙ্গলবার কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ।
কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘দুপক্ষের আধিপত্য বিস্তারে একের পর এক খুন হচ্ছে। রক্তাক্ত হচ্ছে পাহাড়পুর গ্রাম। উভয় পক্ষ ধ্বংস হচ্ছে।’