মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে বসবাসরত ভাসমান বেদেপল্লির পরিবারগুলো ভালো নেই। আয়ের মাধ্যমগুলোর চাহিদা না থাকায় পরিবারে উপার্জনক্ষম সদস্যরা অলস সময় পার করছেন। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে তাঁরা।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সোনারং-টঙ্গিবাড়ী ইউনিয়নের সোনারং মডেল সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে বেদেপল্লির ৪টি পরিবারের ২০ জন লোক বসবাস করছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষেরা বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে সাপ শিকার, পানিতে পড়ে যাওয়া স্বর্ণ-অলংকার উদ্ধারসহ বিভিন্ন কাজ করেন। এ ছাড়া নারীরা বিভিন্ন বাজার থেকে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে কোনোভাবে দিনাতিপাত করছেন।
কথা বলে জানা যায়, আগের দিনে তাঁরা গ্রামে ঘুরে ঘুরে দাঁতের পোকা ফেলানো, সিঙ্গা লাগানো, বাতের ব্যথাসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দিয়ে টাকা উপার্জন করতেন। কিন্তু এখন আর সেই সব চিকিৎসা তাঁদের থেকে কেউ নেন না। তাই বর্তমানে কাজ না থাকায় কষ্টে আছেন তাঁরা। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বসবাসরত ভাসমান বেদে পরিবারগুলোর একই অবস্থা।
বেদেপল্লির আসিফ বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন সাপ ধরি, পাশাপাশি পানিতে পড়ে যাওয়া অলংকার খুঁজে উদ্ধার করে দিই। কিন্তু বর্তমানে সাপ তেমন পাওয়া যায় না। সাপের খেলাও মানুষ দেখে না, তাই ঘরে বসেই দিন কাটাতে হচ্ছে। এতে করে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি সরকারি সহযোগিতার কামনা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহনেওয়াজ ব্যাপারী বলেন, ‘বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন ঘুরে ঘুরে সাপের খেলা দেখায়। কিন্তু এখন আর মানুষ আগের মতো সাপের খেলা দেখতে আসে না। গত সাত-আট মাস ধরে বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করে আসছে। বেদে নারীদের দেখা যায় রাস্তায় হেঁটে হেঁটে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা নিয়ে সংসার চালাতে। জনপ্রতিনিধিদের উচিত তাঁদের ত্রাণসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করা।’
সোনারং-টঙ্গিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন লিটন মাঝি বলেন, ‘কিছুদিন ধরে স্কুল মাঠের এদিকে কিছু বেদে সম্প্রদায়ের লোক থাকে। তাদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা তানজিন অন্তরা বলেন, ‘সরকারি ত্রাণসামগ্রী পেলে বেদে পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হবে।’