জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ময়মনসিংহ অঞ্চলে দ্বিতীয় দিনের মতো পরিবহন ধর্মঘট চলেছে। এতে ঢাকাগামী যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিকল্প পন্থায় ঢাকা যেতে গুনতে হচ্ছে তিন গুণ ভাড়া। তবে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আব্দুস সালাম পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক। বাড়ি শেরপুরের নকলা উপজেলায়। গতকাল শনিবার সকালে নকলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নকলা থেকে অটোরিকশা দিয়ে ফুলপুর আসেন ২০০ টাকায়। সেখান থেকে ১৮০ টাকায় ময়মনসিংহ আসেন। পরে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ থেকে অটো দিয়ে ২০ টাকা ভাড়ায় বাইপাস আসেন। সেখানে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে মাইক্রোবাসে সাড়ে পাঁচ শ টাকা ভাড়া দিয়ে ঢাকার দিকে রওনা হন।
আব্দুস সালাম বলেন, ‘এত ভোগান্তির মধ্যে কোনো দিন পড়িনি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ছোট ছোট যানবাহন চালকদের ঈদ লেগেছে। তাঁরা মানুষকে জিম্মি করে ভাড়া আদায় করছে। যে টাকা খরচ করে চারবার ঢাকা যাওয়া আসা করা যেত, সেই টাকা ঢাকায় যাওয়াতেই খরচ হচ্ছে। ভোগান্তির কথা তো বলাই লাগে না।’
একই অবস্থা জামালপুরের খাদেম আলীর। তিনি জামালপুর থেকে সাড়ে তিন শ টাকা ভাড়া দিয়ে ময়মনসিংহ বাইপাস পর্যন্ত আসেন। তবে সেখানে বড় কোনো যানবাহন না পাওয়ায় অটোরিকশায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
খাদেম আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলেছে। জরুরি কাজে ঢাকা যেতে গিয়ে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সরকার এবং পরিবহন মালিকদের কারণে সাধারণ মানুষের ১২টা বাজছে।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ বাইপাস মোড় থেকে ভালুকাগামী অটোরিকশাচালক হাসেম আলী বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীর অনেক চাপ। তাই সড়কেও আমাদের খরচ বেড়েছে, সে জন্য কিছু টাকা বেশি নিচ্ছি। এখন কিছু টাকা কামানোর সুযোগ পেয়েছি।’
প্রাইভেটকারচালক সাজু রহমান বলেন, ‘গণপরিবহন চলবে, আমাদের কেউ খোঁজে না। এখন বন্ধ বিধায় আমাদের একটু কদর বাড়ছে। তাই আমরা একটু সুবিধা নিচ্ছি মাত্র।’
ময়মনসিংহ জেলা হালকা মোটরযান শ্রমিক শাখার সহসভাপতি বলেন, ‘প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং হায়েস জেলায় ৯ শ’র মতো রয়েছে। এর মধ্যে ৪ শ’র মতো গাড়ি ভাড়ায় চালছে। তবে কাউকে জিম্মি করে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।’
জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অটোরিকশা, মাহেন্দ্রর চালকেরা বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউ যদি এমনটি করে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’