গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ব্যবসায়ী দুলাল শেখ হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ে পাঁচ আসামিকে ফাঁসির আদেশ ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। দীর্ঘ শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, উপজেলার ভট্টাচার্য্য কান্দি গ্রামের ফক্কার শেখ, মো. মেহেদী হাসান শেখ, গোহালা গ্রামের সুমন সাহা, মো. কাওছার ফকির এবং শ্রীজিতপুর গ্রামের মো. আল আমিন মোল্লা।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ২ জুন বিকেলে দুলাল শেখ বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাতে তিনি বাড়ি না ফিরলে স্ত্রী সুলতানা বেগম তাঁকে ফোন করলে তিনি আসামিদের সঙ্গে রয়েছেন বলে জানান। এরপর রাতের যেকোনো সময় গোহলা গ্রামের একটি শ্মশান ঘাটে দুলাল শেখকে কুপিয়ে হত্যা করে কুমার নদীতে ফেলে দেয়। পরদিন ৩ জুন কুমার নদ থেকে পুলিশ দুলাল শেখের মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই দিনই মুকসুদপুর থানায় বেশ কয়েকজনকে আসামি করে নিহতের স্ত্রী সুলতানা বেগম একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ফক্কার শেখ, মো. মেহেদী হাসান শেখ, সুমন সাহা, মো. কাওছার ফকির ও মো. আল আমিন মোল্লাকে আসামি করে ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
হত্যার হুকুমদাতা প্রধান আসামি আল আমিন মোল্লা বিদেশে থাকলেও বাকি চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় আসামি মো. মেহেদী হাসান শেখ ও সুমন সাহা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁরা জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। বিচারক দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামিদের অনুপস্থিতিতে প্রত্যেক আসামিকে ফাঁসির আদেশ ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট মো. শহিদুজ্জামান খান পিটু এবং আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন মুন্সী মো. আতিয়ার রহমান ও মোহাম্মদ আবু তালেব শেখ।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট মো. শহিদুজ্জামান খান পিটু বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।