বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিক তঞ্চঙ্গ্যা রক্সির (২৯) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নানা রকম তথ্য পাওয়া গেছে। প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান করে বাসায় ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলেও তথ্য পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্রও আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল মান্নান গতকাল শুক্রবার বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, দুপুরে অনিকের লাশ সমাহিত করা হয়েছে।
ওসি বলেন, অনিক মৃত্যুর আগে একটি ‘সুইসাইড নোট’ লিখে গেছেন। তাতে লেখা রয়েছে, ‘সুস্থ মস্তিষ্কে এটা করিনি, ভূতে ধরেছিল। মা লাল আঙুর আর হরলিক্স দিয়েছিল। খাওয়ার পর সুস্থ বোধ করছি। কিন্তু পরিস্থিতি এতই ভয়ের যে আর কিছুই চিন্তা করতে পারিনি। আমি বেইমান নই, আমি বেইমান নই।’
আবদুল মান্নান আরও বলেন, তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। তাকে শুক্রবার দুপুরে পারিবারিকভাবে সমাহিত করা হয়।
জানা গেছে, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে ওই ব্যক্তিকে পোড়ানোর বদলের সমাহিত করার রীতি রয়েছে।
ওসি আরও জানান, অনিক তঞ্চঙ্গ্যার বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। মা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করেন। একমাত্র বোনের বিয়ে হয়েছে রাঙামাটিতে।
রোয়াংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি অনিক তঞ্চঙ্গ্যার মরদেহ গত বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের বটতলী পাড়ার নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর শরীর ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। দুপুর ১২টা থেকে একটার মধ্যে এই মৃত্যু হতে পারে বলে ওসি জানিয়েছেন।
অনিক তঞ্চঙ্গ্যা চট্টগ্রামের চন্দনাইশ বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবিতে অনার্স শেষ করেছেন। পরে এলএলএম ফাইনাল পরীক্ষা দেন। তিনি এক বছর আগে রোয়াংছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান।
অনিকের বাবা অনিল মাস্টার রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কয়েক বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মা ছেলেকে খাবার খাইয়ে কর্মস্থলে যান। ঘণ্টাখানেক পর এসে ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান। ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাননি তিনি। লোকজন এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পান, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন অনিক।