বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পদে বড় ধরনের রদবদল হতে যাচ্ছে। এ রদবদলের শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামকে দেশে ফেরানোর মধ্য দিয়ে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রদবদলের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূত পদে এবং অস্ট্রেলিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, মরিশাস ও কানাডায় হাইকমিশনার পদে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার।
গত ১০ ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর হঠাৎ মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর রুটিন রদবদলের পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি মিশনে শীর্ষ পদে বদলের বিষয়টি সামনে চলে আসে। এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সরকার পুরোপুরি অন্ধকারে ছিল। শুধু সরকারই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসও এ প্রসঙ্গে কিছুই জানত না বলে সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়। এ প্রসঙ্গে সরকারদলীয় ফোরামে রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের ভূমিকা নিয়ে বেশ সমালোচনাও হয়েছে। আর ওয়াশিংটন দূতাবাসের সার্বিক কর্মকাণ্ডে বিরক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে সেখানে রদবদল আনা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশটির সঙ্গে সম্পর্কে চলমান অস্বস্তির প্রেক্ষাপটেও এ পরিবর্তন প্রয়োজন বলে মনে করছে সরকার।
রদবদলের কারণ জানতে চাইলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০২৩ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন। আর এ নির্বাচনের সময়ে এমন কাউকে যুক্তরাষ্ট্রে রাখতে চাইছে না সরকার, যার দেশটিতে বিন্দুমাত্র পরিচিতি তৈরি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরানকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এগ্রিমো বা অনাপত্তিপত্র চাওয়া হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘে স্থায়ী মিশনের প্রধান রাষ্ট্রদূত মো. মুস্তাফিজুর রহমানকে ভারতে হাইকমিশনার পদে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার পদে যাদের তিন বছর মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে, তাঁদের রুটিন বদলির বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামানের চুক্তির মেয়াদ চলতি বছরের মাঝামাঝি শেষ হওয়ায় চীনে মিশন প্রধানের পদ শূন্য হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান, যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ এবং মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী ও মরিশাসে হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদের নিজ পদে তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাঁদের নতুন জায়গায় বদলি করা হবে।
এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ ৪-৫ জন কর্মকর্তাকে বিদেশে রাষ্ট্রদূত বা সমমর্যাদার পদে পদায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।