হোম > ছাপা সংস্করণ

গাংগে পানি আহে ভাটি থাইকা

মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট

‘ভাইরে আগে আমরা যহন ছোট্ট ছোট্ট, তহন গাংগে জালি লয়ে গেলেই খালাই ভইরা মাছ লইয়া আইতাম। আর এহন গাংগে (নদ) পানিই আহে না। ছোড থাইকা দেইখা আইতাছি, পানি আহে উজান থাইকা। আর এহন গাংগে ঢল আইলে আমগর উজানে পানি যায়। যুগ পাল্টাইছে।’ ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন হালুয়াঘাটের আমতৈল ইউনিয়নের বাসিন্দা আ. সাত্তার।

একসময়ের খরস্রোতা কংস নদ। কিন্তু দখল, ভরাট আর দূষণে কংস এখন অস্তিত্ব সংকটে। হালুয়াঘাটে একসময় এই নদের পানি দিয়ে চাষাবাদ হতো দুই পাড়ের হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে। সেই নদের বুকে এখন সেচপাম্প বসিয়ে আবাদ হচ্ছে ধান, মরিচ, পাটসহ নানা ফসল। নদটি বাঁচাতে খননের দাবি এলাকাবাসীর।

এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার খলাভাঙা এলাকায় ভোগাই নদ থেকে কংস শাখা নদটি দক্ষিণ-পূর্বদিকে চলে গেছে। এই শাখাটি খলাভাঙা গ্রাম হয়ে হালুয়াঘাট উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের গোরকপুর, চর গোরকপুর, মাইজপাড়া, রামনগর, জৈয়তক, ডুবারপাড়, ঝাউগড়া ও আমতৈল ইউনিয়নের বাহিরশিমুল হয়ে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার ঘুরেছে। শেষে ফুলপুরের সরচাপুর গিয়ে পুনরায় ভোগাই নদে মিশেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একসময় এই নদের পানি দিয়ে খেতে সেচের পাশাপাশি গৃহস্থালির কাজ, গবাদিপশুর গোসল করানোসহ নানান কাজে ব্যবহার করতেন গ্রামবাসী। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায়, কিছু অসাধু মানুষের দখল ও দূষণে এবং সময়মতো খনন না করায় এখন বেহাল দশা নদটির। উজানে নদটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষায় নতুন পানি আসে বিপরীত দিক ভাটি থেকে। ভাটিতে নদীর অস্তিত্ব কিছুটা থাকলেও উজানে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কংস নদের শাখামুখেই রয়েছে স্লুইস গেট। সেখান থেকে তিন কিলোমিটার নদী খননকাজ করেছে বিএডিসি। তবে খননকাজ বোঝার কোনো উপায় নেই। খনন করা বালি রাখা হয়েছে দুই পাশে। এতেবিপত্তি বেড়েছে। পাশে রাখা বালি ও মাটি ছিটিয়ে পড়ে আছে নদে। এ নিয়ে ভাটির দুই পাড়ের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। চরগোরকপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদের বুকে সবুজ ফসলি জমি। কোথাও কোথাও বিশাল মরিচখেত। কোথাও কোথাও নদের বুকে পাম্প বসিয়ে সেচ দেওয়া হচ্ছে বোরো খেতে। ওই এলাকা থেকে আমতৈল ইউনিয়নের সরচাপুর এলাকা পর্যন্ত দখল আর ভরাটে বিলীন নদটি।

চরগোরকপুর এলাকার এক কৃষক জানান, তাঁর জমির নিচু অংশে নদ ভরাট হয়ে চর জাগায় এখন সেটি দখল করে চাষাবাদ করছেন তিনি। শুধু তিনিই নন, আরও অসংখ্য মানুষ জমির পাশে দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় এক শিক্ষক জানান, নদটি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খনন করলে আবারও প্রাণ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সরকারের কাছে নদীটি খননের জোর দাবি জানান তিনি।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, উপজেলায় প্রধান কয়েকটি নদ-নদী প্রাকৃতিকভাবে ও অবৈধ দখলের কারণে ভরাট হয়ে গেছে। নদটি রক্ষা করার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কংস নদ খননের কাজ প্রক্রিয়াধীন। আশা করি খনন শেষ হলে এলাকার মানুষের অনেক উপকার হবে। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ