মাইলেজের চক্করে পড়ে ধীরে ধীরে থেমে যাচ্ছে ট্রেনের চাকা। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী তিন জোড়া শাটল ট্রেন ও ঢাকার পাঁচ জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনগুলো শুক্র ও শনিবার চলাচল করত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিতর্কিত দুটি ধারা বাতিল না করায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। এ কারণে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন না চালকেরা (লোকোমাস্টার)। তাঁরা হুমকি দিয়েছেন, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়া হলে সারা দেশের সব ট্রেন চালানো থেকে বিরত থাকবেন। এতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহাসংকটের মুখে পড়েছে রেলওয়ে। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয় মাইলেজের দুটি ধারার মধ্যে একটি মেনে নিয়েছে। ধারাটি হলো অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের ভাতা। কিন্তু পেনশনে অতিরিক্ত ৭৫ শতাংশের বেশি টাকা দিতে নারাজ মন্ত্রণালয়। তাই এই ধারা না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন চালকেরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফদের এক বেসিকের সমপরিমাণ বেশি টাকা এবং পেনশনে মূল টাকার ৭৫ শতাংশেরও বেশি দেওয়া হয়। এই হিসাবকে মাইলেজ বলা হয়।
২৫ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন চালকেরা। এর মধ্যে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা। আজ ২৭ জানুয়ারি পাহাড়তলী লোকোশেড থেকে ডিআরএম অফিস পর্যন্ত মিছিল শেষে বিভাগীয় কমিটির সভা করবেন। এ ছাড়া ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেলস্টেশন, পাহাড়তলী লোকোশেড, লাকসাম লোকোশেড ও সিজিপিওয়াই লোকোশেডে সমাবেশ-মিছিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি ট্রেন চালাচ্ছি না আমরা। এতে সারা দেশে চলাচলরত যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোর পাশাপাশি পার্সেল ট্রেন চরম শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় দুটি ধারার মধ্যে একটি মেনে নিয়েছে। অন্যটি ৩০ জানুয়ারির মধ্যে না মানলে কর্মবিরতিতে যাব আমরা।’