মাহবুব ইসলাম পলাশ। গাছের চারা রোপণই তাঁর নেশা। স্কুলজীবন থেকেই টিফিনের টাকা জমিয়ে গাছ লাগানো শুরু করেন। এভাবে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তিতে গড়ে তুলেছেন ৩৪৫ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ৫ হাজার গাছের বাগান।
এ কাজে সার্বিকভাবে তাঁকে সাহায্য করছেন মা তাকমিনা খাতুন (৬০)। মাহবুব ইসলাম পলাশের বাবা ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তা আবুল আজাদ।
মাহবুব ইসলাম সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাটের শেখপাড়ার বাসিন্দা। তিনি ২০০৪ সালে উপজেলার ভদ্রঘাট শামছুন মহসিন উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০০৬ সালে রাজশাহীর শাহ মখদুম কলেজ থেকে এইচএসসি ও পরে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
মাহবুব ইসলাম পলাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০০৩-২০০৭ সালের মাঝামাঝি বন বিভাগ থেকে এক টাকা দরে বেশ কিছু সেগুন গাছ কিনি। আমার আগ্রহ দেখে তারা বলল, দেশ থেকে প্রায় ৪৫ জাতের গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সেগুলো সংগ্রহ করলে দেশ ও পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা যাবে।’ এরপর তিনি ৪৩ জাতের গাছ সংগ্রহ করেন।
মাহবুব আরও বলেন, গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। গাছ যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, তেমনি গাছ লাগালে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। তাঁর কাঠজাতীয় সেগুন, মেহগনিসহ যে গাছগুলো আছে সেগুলোর মূল্য ৩৫ লাখ টাকা হবে বলে জানান তিনি। তাঁর বাগানে সুন্দরবনের ১৬ প্রজাতির গাছ আছে।
এ ছাড়া আছে সিঁদুর গাছ, উত্তর আমেরিকার ফুলের গাছ তুষারশুভ্র স্যাম্বুকাস, জাপানি ফুলের গাছ ট্যাবাবুয়া, দেশীয় লালপাতা চম্পা, বচি, ধূপ, আগর, তুনসহ নানান বিপন্ন গাছ।
এ বিষয়ে উপজেলার ভদ্রঘাট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মাহবুব ইসলাম পলাশের মতো যাঁরা বৃক্ষপ্রেমী রয়েছেন বা যাঁরা বৃক্ষ নিয়ে কাজ করতে চান, তাঁদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও বৃক্ষের চারা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। তাঁর ব্লকে পাঁচ থেকে সাতজন বৃক্ষরোপণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।