লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার লোহাকুচি বিজিবি ক্যাম্প থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় এক আসামি পালিয়ে গেছেন। গতকাল শনিবার ভোর ৪টার দিকে তিনি পালিয়ে যান।
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম মনছুর আলী। তাঁর বাড়ি উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের মালগাড়া গ্রামে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিজিবি সদস্যরা মালগাড়া গ্রাম থেকে মনছুরকে আড়াই কেজি গাঁজা ও একটি মোটরসাইকেলসহ আটক করে স্থানীয় লোহাকুচি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। ক্যাম্পে আসামি নিয়ে যাওয়ার যানবাহন না থাকায় এবং গভীর রাত হয়ে যাওয়ায় তাঁকে ক্যাম্পেই রাখা হয়। কিন্তু শনিবার ভোর ৪টার দিকে ওই ক্যাম্প থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় পাহারারত বিজিবি সদস্যের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান মনছুর। এর পর থেকে খোঁজাখুঁজি করার পরেও তাঁকে পুনরায় গ্রেপ্তার করতে পারেননি বিজিবি সদস্যরা।
এ বিষয়ে লোহাকুচি ক্যাম্পের দায়িত্বরত ল্যান্স নায়েক বাদশা মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মনছুরকে গত শুক্রবার রাতে গাঁজা ও একটি মোটরসাইকেলসহ আটক করা হয়। গভীর রাতে যানবাহনের অভাবে থানায় নেওয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে ভোরে তিনি পাহারারত সদস্যের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাতকড়াসহ পালিয়ে যান। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে উপজেলার মালগাড়া এলাকার বাসিন্দা কলেজশিক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, মনছুর দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছেন। প্রশাসনের লোকজন সবকিছুই জানেন। কিন্তু কোনো লাভ নেই। এদের মতো মাদক কারবারিরা গ্রেপ্তারের কয়েক দিন পর দেখি তাঁরা কীভাবে যেন আবার বেরিয়ে আসছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি এ টি এম গোলাম রসুল বলেন, এ বিষয়ে বিজিবির লোহাকুচি বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার বাদশা মিয়া যে মামলা করেছেন, সেখানে হাতকড়াসহ পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেননি। তবে মনছুর আলী ও আবুল কালাম নামের দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেল ও ৩ কেজি গাঁজা রেখে পালিয়ে গেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মনছুরের বিরুদ্ধে থানায় আগের কোনো মামলা নেই বলে ওসি জানান।
কালীগঞ্জের গোড়ল ইউপির চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল ইসলাম বলেন, মনছুর একজন পেশাদার মাদক কারবারি। তিনি খুব চতুর, সবাইকে টাকাপয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে মাদকের কারবার চালান। তাই তাঁর বিরুদ্ধে হয়তো কোনো মামলা নেই।
বিজিবির লোহাকুচি ক্যাম্পের নতুন ক্যাম্প কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। আগের ক্যাম্প কমান্ডার বাদশা মিয়া আজকেই (শনিবার) বদলি হয়ে গেছেন। হাতকড়াসহ আসামি পালানোর বিষয়ে কোনো কমিটি হয়েছে কি না, এ বিষয়ে তিনি বলতে পারেন না বলে জানান।